Index

মথি - Chapter 18

1 ঠিক সেসময়ে শিষ্যেরা যিশুর কাছে এসে বললেন, 'তবে স্বর্গরাজ্যে কে সবচেয়ে বড়?'
2 তিনি একটি শিশুকে নিজের কাছে ডেকে তাকে তাঁদের মধ্যে দাঁড় করালেন
3 পরে বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ; তোমাদের যদি পরিবর্তন না হয় ও তোমরা শিশুদের মত না হয়ে ওঠ, তবে স্বর্গরাজ্যে কখনও প্রবেশ করতে পারবে না।
4 সুতরাং যে কেউ নিজেকে এই শিশুর মত ছোট করে, স্বর্গরাজ্যে সে-ই সবচেয়ে বড়।
5 যে কেউ এর মত একটিমাত্র শিশুকেও আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে;
6 কিন্তু এই যে ক্ষুদ্রজনেরা আমাতে বিশ্বাস রাখে, যে কেউ তাদের একজনেরও পদস্খলন ঘটায়, তার গলায় জাঁতাকলের বড় পাথর বেঁধে তাকে সমুদ্র-গর্ভে ডুবিয়ে দেওয়াই বরং তার পক্ষে ভাল।
7 জগৎকে ধিক্, যা এতগুলো পদস্খলনের কারণ! পদস্খলনের কারণ ঘটবেই বটে; কিন্তু ধিক্ সেই মানুষকে, যে পদস্খলনের অবকাশ ঘটায়।
8 তোমার হাত বা পা যদি তোমার পদস্খলনের কারণ হয়, তবে তা কেটে দূরে ফেলে দাও; দু'টো হাত বা দু'টো পা নিয়ে অনন্ত আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে নুলো বা খোঁড়া হয়ে জীবনে প্রবেশ করাই বরং তোমার পক্ষে ভাল।
9 আর তোমার চোখ যদি তোমার পদস্খলনের কারণ হয়, তবে তা উপড়ে দূরে ফেলে দাও; সেই চোখ নিয়ে নরকের আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার চেয়ে এক চোখ নিয়ে জীবনে প্রবেশ করাই বরং তোমার পক্ষে ভাল।
10 11 12 তোমরা কি মনে কর? কোন একজন লোকের যদি একশ'টা মেষ থাকে, আর সেগুলোর মধ্যে একটা পথভ্রষ্ট হয়, তবে সে কি বাকি নিরানব্বইটাকে ফেলে রেখে পর্বতে পর্বতে গিয়ে এক্টটার খোঁজে বেড়াবে না?
13 আর আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সে যদি তাকে কোনমতে খুঁজে পায়, তবে যে নিরানব্বইটা ভ্রষ্ট হয়নি, তাদের চেয়ে সেইটার জন্য সে বেশি আনন্দ করবে।
14 একই প্রকারে, এই ক্ষুদ্রজনদের একজনও বিনষ্ট হোক, তা কখনোই তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা নয়।
15 আর তোমার ভাই যদি কোন অন্যায় করে, তবে গিয়ে, যেখানে কেবল তুমি ও সে-ই আছ, সেইখানে তাকে অন্যায়টা বুঝিয়ে দাও; সে যদি তোমার কথা শোনে, তুমি নিজের ভাইকে জয় করেছ।
16 কিন্তু সে যদি না শোনে, তবে আর দু' একজনকে সঙ্গে নিয়ে যাও, যেন দু' তিনজন সাক্ষীর প্রমাণে ব্যাপারটার নিষ্পত্তি হয় ।
17 আর সে যদি তাদের কথা না শোনে, মণ্ডলীকে বল; আর যদি মণ্ডলীর কথাও না শোনে, তবে সে তোমার কাছে কোন বিজাতীয় বা কর আদায়কারীর মত হোক।
18 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, পৃথিবীতে তোমরা যা কিছু বেঁধে দেবে, স্বর্ণে তা বাঁধা হবে, এবং পৃথিবীতে তোমরা যা কিছু মুক্ত করবে, তা স্বর্গে মুক্ত হবে।
19 আবার আমি তোমাদের সত্যি বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের দু'জন কোন কিছু যাচনা করার জন্য যদি একমন হয়, তবে আমার স্বর্গস্থ পিতা তাদের তা মঞ্জুর করবেন;
20 কেননা যেখানে দু' তিনজন আমার নামে একত্র হয়, আমি সেখানে তাদের মধ্যে আছি।'
21 তখন পিতর তাঁর কাছে এসে বললেন, 'প্রভু, আমার ভাই আমার প্রতি অন্যায় করলে আমি কতবার তাকে ক্ষমা করব? কি সাতবার পর্যন্ত ?
22 যিশু তাঁকে বললেন, 'তোমাকে বলছি, সাতবার পর্যন্ত নয়, কিন্তু সত্তরগুণ সাতবার পর্যন্ত।
23 এজন্য স্বর্গরাজ্য তেমন এক রাজার সঙ্গে তুলনা করা যায়, যিনি নিজের কর্মচারীদের কাছ থেকে হিসাব নেবেন বলে মনস্থ করলেন।
24 তিনি হিসাব করতে বসেছেন, তখন একজনকে তাঁর কাছে আনা হল যার লক্ষ লক্ষ টাকার ঋণ ছিল ;
25 কিন্তু তার সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা না থাকায় তার প্রভু আদেশ দিলেন, তাকে ও তার স্ত্রী-পুত্রকে ও তার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে যেন ঋণটা শোধ করিয়ে নেওয়া হয়;
26 তাতে সেই কর্মচারী তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে বলল, প্রভু, আমার প্রতি ধৈর্য ধরুন, আমি সমস্তই শোধ করব।
27 তখন সেই কর্মচারীর প্রভু দয়ায় বিগলিত হয়ে তাকে মুক্ত করলেন ও তার ঋণ মাপ করে দিলেন।
28 কিন্তু সেই কর্মচারী বাইরে গিয়ে তার সহকর্মীদের একজনের দেখা পেল যে তার কাছে একশ' টাকা ঋণী ছিল; সে তার গলা টিপে ধরে বলল, তোমার দেনাটা শোধ কর।
29 তখন তার সহকর্মী তার পায়ে পড়ে মিনতি জানাতে জানাতে বলল, আমার প্রতি ধৈর্য ধর, আমি ঋণটা শোধ করব;
30 তবু সে রাজি হল না, বরং গিয়ে তাকে কারাগারে ফেলে রাখল যে পর্যন্ত ঋণটা শোধ না করে।
31 ব্যাপারটা দেখে তার সহকর্মীরা খুবই দুঃখ পেল, আর নিজেদের প্রভুর কাছে গিয়ে কথাটা সবই বলে দিল।
32 তখন সেই প্রভু তাকে কাছে ডাকিয়ে এনে বললেন, ধূর্ত কর্মচারী! তুমি আমার কাছে মিনতি করলে আমি তোমার ওই সমস্ত ঋণ মাপ করেছিলাম।
33 আমি যেমন তোমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলাম, তেমনি তোমার সহকর্মীর প্রতি দয়া দেখানো কি তোমারও উচিত ছিল না?
34 আর সেই প্রভু ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে পীড়কদের হাতে তুলে দিলেন যে পর্যন্ত সে সমস্ত ঋণ শোধ না করে।
35 আমার স্বর্গস্থ পিতা তোমাদের প্রতি ঠিক এভাবেই ব্যবহার করবেন, তোমরা প্রত্যেকে যদি নিজ নিজ ভাইকে অন্তর থেকেই ক্ষমা না কর।'