1 এভাবে নিজ বারোজন শিষ্যের কাছে এই সমস্ত নির্দেশ দেওয়া শেষ করার পর যিশু সেখান থেকে তাদের শহরে শহরে উপদেশ দিতে ও প্রচার করতে বেরিয়ে পড়লেন।
2 এদিকে যোহন কারাগারে থেকে খ্রিষ্টের কর্মের কথা শুনে নিজের শিষ্যদের মধ্য দিয়ে তাঁর কাছে জিজ্ঞাসা করে পাঠালেন,
3 যিনি আসছেন, আপনিই কি সেই ব্যক্তি? না আমরা অন্যের অপেক্ষায় থাকব?'
4 উত্তরে যিশু তাদের বললেন, “তোমরা যা কিছু শুনতে ও দেখতে পাচ্ছ, তা যোহনকে গিয়ে জানাও :
5 অন্ধ আবার দেখতে পায় ও গোঁড়া হেঁটে বেড়ায়, সংক্রামক চর্মরোগে আক্রান্ত মানুষ শুচীকৃত হয় ও বধির শুনতে পায়, এবং মৃত পুনরুত্থিত হয় ও দীনদরিদ্রদের কাছে শুভসংবাদ প্রচার করা হয়;
6 আর সুখী সেই জন, আমার বিষয়ে যার পদস্খলন না হয়।
7 তারা চলে যাচ্ছে, সেসময় যিশু লোকদের কাছে যোহন বিষয়ে কথা বলতে লাগলেন : 'তোমরা প্রান্তরে কী দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে দোলা একটা নলগাছ?
8 তবে কি দেখতে গিয়েছিলে? মোলায়েম পোশাক পরা কোন ব্যক্তিকে? দেখ, যারা মোলায়েম পোশাক পরে, তারা তো রাজপ্রাসাদেই থাকে।
9 তবে কী দেখতে গিয়েছিলে? একজন নবীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, নবীর চেয়েও শ্রেষ্ঠই এক মানুষকে দেখতে গিয়েছিলে।
10 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর বিষয়ে লেখা আছে :
দেখ, আমি আমার দূত তোমার সামনে প্রেরণ করছি ;
তোমার সামনে সে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।
11 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, নারী গর্ভজাতদের মধ্যে বাপ্তিস্মদাতা যোহনের চেয়ে মহান কেউই কখনও আবির্ভূত হয়নি; তবু স্বর্গরাজ্যে যে ক্ষুদ্রতম, সে তাঁর চেয়ে মহান।
12 বাপ্তিস্মদাতা যোহনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত স্বর্গরাজ্য প্রবল চেষ্টার অধীন, আর যারা প্রবল চেষ্টা করছে তারাই তা দখল করছে;
13 কেননা সমস্ত নবী ও বিধান যোহন পর্যন্তই ভাববাণী দিয়েছে;
14 আর তোমরা যদি কথাটা গ্রহণ করতে সম্মত হও, তবে তিনিই সেই এলিয়, যাঁর আসার কথা ছিল।
15 যার শুনবার কান আছে, সে শুনুক !
16 আমি কার সঙ্গেই বা এই প্রজন্মের মানুষদের তুলনা করব? তারা তো এমন ছেলেদের মত যারা বাজারে বসে নিজেদের বন্ধুদের উদ্দেশ করে বলে,
17 আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম,
কিন্তু তোমরা নাচলে না ;
বিলাপগান গাইলাম,
কিন্তু তোমরা বুক চাপড়াওনি।
18 কারণ যোহন এসে আহার ও পান করলেন না, আর লোকে বলে, সে ভূতগ্রস্ত।
19 মানবপুত্র এসে আহার ও পান করেন, আর লোকে বলে, ওই দেখ, একজন পেটুক, একটা মাতাল, কর আদায়কারী ও পাপীদের বন্ধু। কিন্তু প্রজ্ঞা নিজের কর্ম দ্বারা নির্দোষ বলে সাব্যস্ত হয়েছে!”
20 যে যে শহরে তাঁর বেশির ভাগ পরাক্রম-কর্ম সাধন করা হয়েছিল, তিনি তখন সেই সকল শহরকে ভর্ৎসনা করতে লাগলেন, কেননা সেগুলো মনপরিবর্তন করেনি :
21 খোরাজিন, ধিক্ তোমাকে! বেসাইদা, ধিক্ তোমাকে! কেননা তোমাদের মধ্যে যে সকল পরাক্রম-কর্ম সাধন করা হয়েছে, তা যদি তুরস ও সিদোনেই সাধন করা হত, তবে বহুদিন আগেই তারা চটের কাপড়ে ছাইয়ে বসে মনপরিবর্তন করত।
22 তবু আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমাদের দশার চেয়ে তুরস ও সিদোনের দশাই সহনীয় হবে।
23 আর তুমি, হে কাফার্নাউম, তোমাকে নাকি স্বর্গ পর্যন্ত উচ্চ করা হবে? পাতাল পর্যন্তই তোমাকে নামিয়ে দেওয়া হবে; কেননা যে সকল পরাক্রম-কর্ম তোমার মধ্যে সাধন করা হয়েছে, তা যদি সদোমে সাধন করা হত, তবে সদোম আজ পর্যন্ত থাকত।
24 তবু আমি তোমাদের বলছি, বিচারের দিনে তোমার দশার চেয়ে সদোম অঞ্চলের দশাই সহনীয় হবে।”
25 ঠিক সেসময় শিশু বলে উঠলেন, 'হে পিতা, হে স্বর্গমর্তের প্রভু, আমি তোমাকে ধন্য বলি, কারণ তুমি প্রজ্ঞাবান ও বুদ্ধিমানদের কাছে এই সকল বিষয় গুপ্ত রেখে শিশুদেরই কাছে তা প্রকাশ করেছ;
26 হ্যাঁ, পিতা, তোমার প্রসন্নতায় তুমি তা-ই নিরূপণ করলে।
27 পিতা আমার হাতে সবই তুলে দিয়েছেন, এবং পিতা ছাড়া আর কেউই পুত্রকে জানে না, পিতাকেও কেউ জানে না সেই পুত্র ছাড়া ও তারাই ছাড়া, যাদের কাছে পুত্র নিজেই তাঁকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন।
28 তোমরা, পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত যারা, সকলে আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব।
29 আমার জোয়াল কাঁধে তুলে নাও, ও আমার কাছ থেকে শিখে নাও, কারণ আমি কোমল ও নমহৃদয়; আর তোমরা নিজ নিজ প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাবে :
30 হ্যাঁ, আমার জোয়াল সুবহ, ও আমার বোঝা লঘুভার।”