1 আর্তাত্মারক্সিস রাজার শাসনকালের বিংশ বর্ষে, নিসান মাসে, যখন আঙুররস পরিবেশনের ভার আমার হাতে ছিল, তখন আমি আঙুররসের পাত্র নিয়ে রাজার সামনে এগিয়ে দিলাম। এর আগে আমি রাজার সামনে কখনও বিষণ্ণ মুখে দাঁড়াইনি।
2 তাই রাজা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তোমার চেহারা এমন বিষণ্ণ দেখাচ্ছে কেন? তুমি তো অসুস্থ নও! মনের জ্বালা ছাড়া এ অন্য কিছু হতে পারে না।' তখন আমি ভীষণ ভয় পেয়ে
3 রাজাকে বললাম, 'মহারাজ চিরজীবী হোন! তবু যে নগরীতে আমার পিতৃপুরুষদের সমাধিমন্দির রয়েছে, তা যখন বিধ্বস্ত অবস্থায় পড়ে আছে ও তার সমস্ত তোরণদ্বার আগুনে পোড়া অবস্থায় রয়েছে, তখন আমার মুখ বিষণ্ণ হবে না কেন?"
4 রাজা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তোমার যাচনা কী?' স্বর্গেশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে
5 আমি রাজাকে এই উত্তর দিলাম, ‘মহারাজ যদি এতে প্রীত হন, এবং আপনার দাস যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকে, তবে আপনি আমাকে যুদায়, আমার পিতৃপুরুষদের সমাধিমন্দিরের নগরীতেই প্রেরণ করুন, যেন আমি তা পুনর্নির্মাণ করতে পারি।'
6 তখন রাজা — রাজমহিষীও তাঁর পাশে বসে ছিলেন—আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'তেমন যাত্রার জন্য তোমার কত দিন লাগবে? তুমি কবে ফিরে আসবে?” আমি তাঁর কাছে একটা নির্দিষ্ট সময়ের কথা ইঙ্গিত করলে রাজা প্রীত হয়ে আমাকে যেতে দিলেন।
7 পরে আমি রাজাকে বললাম, 'মহারাজ যদি এতে প্রীত হন, তবে [ইউফ্রেটিস] নদীর ওপারের প্রদেশপালদের জন্য আমাকে পত্র দেওয়া হোক, তাঁরা যেন আমাকে তাঁদের এলাকার মধ্য দিয়ে যেতে ও ঘুদায় প্রবেশ করতে দেন;
8 তাছাড়া রাজ-অরণ্যের সংরক্ষক সেই আসাফের জন্যও আমাকে পত্র দেওয়া হোক, যেন মন্দির-সংলগ্ন দুর্গদ্বারগুলি, নগরপ্রাচীর ও আমার নিজের আবাস তৈরি করার জন্য তিনি আমার জন্য কাঠ সরবরাহ করেন।' আমার উপরে আমার পরমেশ্বরের মঙ্গলময় হাত ছিল বিধায় রাজা আমাকে সেই সমস্ত পত্র দিলেন।
9 আমি [ইউফ্রেটিস] নদীর ওপারের প্রদেশপালদের কাছে এসে উপস্থিত হয়ে রাজার পত্র তাঁদের দিলাম। রাজা আমার সঙ্গে সৈন্যদলের কয়েকজন অধিপতিকে ও অশ্বারোহীদেরও পাঠিয়েছিলেন।
10 কিন্তু যখন হোৱোনীয় সান্ধাল্লাট ও আম্মোনীয় দাস তোবিয়াস আমার আসার খবর পেল, তখন এতেই যথেষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করল যে, ইস্রায়েল সন্তানদের মঙ্গলার্থে একজন লোক এসেছে।
11 তাই আমি যেরুসালেমে এসে পৌঁছলাম। সেখানে তিন দিন থাকবার পর
12 আমি রাতে উঠে আরও কিছুটা লোক সঙ্গে নিলাম—কিন্তু যেরুসালেমের জন্য যা করতে পরমেশ্বর আমাকে প্রেরণা দিয়েছিলেন, সেবিষয়ে কাউকে কিছু বলিনি। যে বাহনের পিঠে চড়ছিলাম, সেটা ছাড়া আমি আর কোন বাহন নিইনি,
13 আর এইভাবে রাতের অন্ধকারের আড়ালে উপত্যকা-দ্বার দিয়ে বাইরে গিয়ে আমি নাগ-ঝরনার দিকে সার-দ্বার পর্যন্ত গেলাম, এবং সেই সব জায়গা পরিদর্শন করলাম যেখানে যেরুসালেম প্রাচীর ভেঙে পড়েছিল ও তার নানা তোরণদ্বার আগুনে পোড়া ছিল।
14 আমি ঝরনাদ্বার ও রাজ-দিঘি পর্যন্ত এগিয়ে গেলাম, কিন্তু যার মধ্য দিয়ে আমার বাহন পশু যেতে পারত, এমন জায়গা ছিল না।
15 তাই রাতের অন্ধকারে আমি প্রাচীর পরিদর্শন করতে করতে উপত্যকার ধার ঘেঁষে উপরের দিকে গিয়ে আবার উপত্যকা-দ্বার দিয়ে ঢুকে ঘরে ফিরে এলাম;
16 কিন্তু আমি যে কোথায় কোথায় গেলাম, কি কি করলাম, এবিষয়ে বিচারকেরা কিছুই জানল না ; এতক্ষণে আমি ইহুদীদের বা যাজকদের বা অমাত্যদের বা অধ্যক্ষদের বা অন্য কর্মচারীদের কাউকেই সেবিষয়ে কথা বলিনি।
17 পরে আমি তাদের বললাম, 'আমরা কেমন দুরবস্থায় আছি, তা তোমরা দেখতে পাচ্ছ; যেরুসালেম একটা ধ্বংসাবশেষ, তার তোরণদ্বারগুলো আগুনে পোড়া অবস্থায় রয়েছে। এসো, আমরা যেরুসালেম প্রাচীর পুনর্নির্মাণ করি, তবে আর কারও অপমানের পাত্র হব না!'
18 আমার পরমেশ্বরের মঙ্গলময় হাত কেমন করে আমার উপরে ছিল, এবং আমার প্রতি রাজা যে কী কথা বলেছিলেন, এই সমস্ত কথা তাদের জানালাম। আর তারা বলল, 'চল, আমরা নির্মাণকাজ শুরু করে দিই!' এইভাবে তারা সাহসের সঙ্গে সেই উত্তম কর্মে হাত দিল।
19 কিন্তু হোরোনীয় সাবাল্লাট, আম্মোনীয় দাস তোবিয়াস ও আরবীয় গেশেম একথা শুনে আমাদের বিদ্রূপ করল ; আমাদের অবজ্ঞা করে বলল, 'তোমরা এ কি কাজ করতে যাচ্ছ? তোমরা কি রাজদ্রোহ করবে?”
20 তখন আমি তাদের এই উত্তর দিলাম, 'স্বর্গেশ্বর যিনি, তিনিই আমাদের সফল করবেন। সুতরাং তাঁর দাস এই আমরা গাঁথতে শুরু করব; যেরুসালেমে তোমাদের কোন অংশ বা অধিকার বা স্মৃতিচিহ্নও নেই।'