1 হায়, আমার কেমন দশা ! আমি যে এমন একজনের মত হয়েছি, গ্রীষ্মকালীন ফল যে পাড়ে কিংবা আঙুর সংগ্রহের পরে আঙুরফল কুড়োয় ! খাবার যোগ্য একটা আঙুরগুচ্ছও নেই; একটা কাঁচা ডুমুরফলও নেই- যা আকাঙ্ক্ষা করছে আমার প্রাণ।
2 ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন হয়েছে, মানুষদের মধ্যে ন্যায়বান ব্যক্তি একেবারে নেই। সকলেই রক্তপাত করার জন্য ওত পেতে থাকে ; প্রত্যেকে নিজ নিজ ভাইকে জাল দিয়ে শিকার করছে।
3 তাদের হাত দু'টো অন্যায়ের জন্য ব্যতিব্যস্ত ; সমাজনেতা উপহার চায়, বিচারক উৎকোচ নিতে উদ্গ্রীব, ক্ষমতাশালী মানুষ নিজ অর্থলালসা মেটাবার জন্যই কথা বলে, আর এইভাবে তারা সবকিছু বিকৃত করে।
4 তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল যে লোক, সে কাঁটাঝোপের মত; সবচেয়ে ন্যায়বান যে লোক, সে কাঁটার বেড়ার চেয়েও খারাপ। তোমার প্রহরীদের দ্বারা ঘোষিত সেই দিন, তোমার কাছে প্রভুর আগমনের সেই দিন এসে গেছে, এখনই তাদের সর্বনাশ!
5 তোমরা বন্ধুকে বিশ্বাস করো না, প্রতিবেশীতেও ভরসা রেখো না। তোমার কাছে যে শুয়ে থাকে, তোমার সেই স্ত্রীর কাছেও তোমার মুখের দ্বার রক্ষা কর।
6 কেননা ছেলে পিতাকে অপমান করে, মেয়ে মায়ের বিরুদ্ধে ও পুত্রবধূ শাশুড়ীর বিরুদ্ধে ওঠে; নিজ নিজ পরিবার-পরিজনই মানুষের শত্রু !
7 কিন্তু আমি প্রস্তুর প্রতি চেয়ে থাকব, আমার ত্রাণেশ্বরে প্রত্যাশা রাখব, আমার পরমেশ্বর আমাকে সাড়া দেবেন !
8 হে আমার বিদ্বেষিণী, আমার দশায় আনন্দ করো না! যদিও আমার পতন হয়েছে, তবু আমি আবার উঠব ; যদিও অন্ধকারে বসে আছি, তবু স্বয়ং প্রভুই হবেন আমার আলো।
9 আমি প্রভুর ক্ষোভ সহ্য করব, কারণ আমি তার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, শেষে তিনি আমার বিবাদে পক্ষসমর্থক হয়ে আমার পক্ষে বিচার নিষ্পত্তি করবেন ; হ্যাঁ, শেষে তিনি আমাকে আলোয় বের করে আনবেন, তখন আমি তাঁর ধর্মময়তা দেখতে পাব।
10 তা দেখে আমার সেই বিদ্বেষিণী লজ্জায় আচ্ছন্না হবে, সে নাকি আমাকে বলছিল : ‘কোথায় তোমার সেই পরমেশ্বর প্রভু?” নিজেরই চোখে আমি সেই বিদ্বেষিণীকে দেখতে পাব, যখন সে পথের কাদার মত হবে পদদলিতা !
11 ওই-ই তো হবে সেই দিন, যেদিনে পুনর্নির্মিত হবে তোমার নগরপ্রাচীর ; সেই দিনেই আরও প্রসারিত হবে তোমার সীমানা সকল :
12 সেই দিনেই আসিরিয়া থেকে ও মিশরের শহরগুলো থেকে, মিশর থেকে সেই [ইউফ্রেটিস] নদী পর্যন্ত, এক সাগর থেকে অন্য সাগর ও এক পর্বত থেকে অন্য পর্বত পর্যন্ত লোকেরা আসবে তোমার কাছে।
13 তবু অধিবাসীদের দোষে ও তাদের কর্মকাণ্ডের ফলে পৃথিবী মরুপ্রান্তর হয়ে যাবে।
14 ওগো, তোমার পাচনি দিয়ে তোমার আপন জনগণকে, তোমার আপন উত্তরাধিকার সেই মেষপালকে চরাও ! সে তো অরণ্যে একাকী রয়েছে, তার চারদিকে উর্বর উর্বর মাঠ : তারা পুরাকালের মত আবার বাশানে ও গিলেয়াদে চরে বেড়াক।
15 মিশর দেশ থেকে তোমার বেরিয়ে আসার দিনের মত আমি তাকে দেখাব আশ্চর্য কর্মকীর্তি।
16 জাতি-বিজাতি তা দেখতে পাবে, নিজেদের সমস্ত পরাক্রম সত্ত্বেও আশাভ্রষ্ট হবে ; তারা মুখে হাত দেবে, বধির হয়ে আসবে তাদের কান।
17 তারা সাপের মত, মাটির বুকে চরে এমন সরিসৃপের মত ধুলা চাটবে, কাঁপতে কাঁপতে তাদের আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসবে তোমার সম্মুখে আতঙ্কিত হয়ে।
18 কেইবা তোমার মত ঈশ্বর, যিনি শঠতা মার্জনা করেন, ও আপন উত্তরাধিকারের অবশিষ্টাংশের পাপ ক্ষমা করেন? তিনি তো ক্রোধ রাখেন না চিরকাল ধরে, যেহেতু কৃপাই দেখাতে প্রীত।
19 তিনি আমাদের প্রতি আবার তাঁর স্নেহ দেখাবেন, আমাদের যত অপরাধ পদদলিত করবেন ; হ্যাঁ, আমাদের সমস্ত পাপ তুমি সমুদ্রতলেই ছুড়ে ফেলে দেবে।
20 যাকোবের প্রতি তোমার বিশ্বস্ততা, আব্রাহামের প্রতি তোমার কৃপা মঞ্জুর কর, যেমন পুরাকাল থেকে আমাদের পিতৃপুরুষদের কাছে শপথ করেছ।