1 সমস্ত বিষয়েরই জন্য এক সময় আছে, ও আকাশের নিচে সমস্ত ব্যাপারের জন্য এক কাল আছে :
2 জন্মের কাল, মরণের কাল ; বীজ বোনার কাল, গাছ-উৎপাটনের কাল ;
3 বধ করার কাল, নিরাময় করার কাল ;
4 ভাঙবার কাল, গাঁথবার কাল ; কাঁদবার কাল, হাসবার কাল ; বিলাপ করার কাল, নাচবার কাল ;
5 পাথর ফেলার কাল, পাথর জড় করার কাল ; আলিঙ্গনের কাল, আলিঙ্গন-বিরতির কাল ;
6 সন্ধানের কাল, হারাবার কাল ; বাঁচিয়ে রাখার কাল, ফেলে দেওয়ার কাল ;
7 ছিঁড়ে ফেলার কাল, সেলাই করার কাল ; নীরব থাকার কাল, কথা বলার কাল ;
8 প্রেম করার কাল, ঘৃণা করার কাল ; যুদ্ধের কাল, শান্তির কাল।
9 মানুষ যে পরিশ্রম করে, সেই পরিশ্রমে তার কী লাভ?
10 আদমসন্তানেরা যেন তাতে ব্যস্ত থাকে, পরমেশ্বর যে কাজ তাদের দিয়েছেন, তা আমি বিবেচনা করলাম।
11 তিনি যা কিছু করেন, সেই সমস্ত কিছু নিজ নিজ সময়ের জন্যই উপযোগী; কিন্তু আদমসন্তানদের হৃদয়ে তিনি কালপ্রবাহের ধারণা রাখা সত্ত্বেও মানুষ পরমেশ্বরের সাধিত কাজের আদি বা অন্ত ধারণ করতে অক্ষম।
12 এতে আমি বুঝতে পারলাম যে, সারা জীবন ধরে আনন্দভোগ করা ও সৎকর্ম পালন করা ছাড়া তাদের আর মঙ্গল নেই।
13 আর যখন মানুষ খাওয়া-দাওয়া করতে পারে ও নিজের পরিশ্রমের ফল ভোগ করতে পারে, তখন এ পরমেশ্বরের দান।
14 আমি ভালই জানি যে, পরমেশ্বর যা কিছু করেন, তা চিরস্থায়ী ; তাতে যোগ দেবারও কিছু নেই, বিয়োগ করারও কিছু নেই। পরমেশ্বর এভাবে ব্যবহার করেন, যেন মানুষ তাঁকে ভয় করে।
15 যা ঘটছে, তা আগেই ঘটে গেছে; যা ঘটবে, তা ইতিমধ্যেই ঘটছে। যা অতীত হয়েছে, পরমেশ্বর তার জবাবদিহি দাবি করেন।
16 আমি সূর্যের নিচে এও লক্ষ করলাম যে, ন্যায্যতার স্থানে অন্যায্যতা রয়েছে, ধর্মময়তার স্থানে অধর্ম রয়েছে।
17 আমি ভাবলাম, ধার্মিক ও দুর্জন, দু'জনকেই পরমেশ্বর বিচার করবেন, কারণ সমস্ত ব্যাপারের জন্য ও সমস্ত কাজের জন্য বিশেষ এক কাল আছে।
18 পরে আদমসন্তানদের বিষয়ে আমি মনে মনে বললাম, পরমেশ্বর তাদের যাচাই করে দেখাতে চান যে, তারা আসলে পশুমাত্র।
19 বাস্তবিকই মানুষের দশা ও পশুর দশা এক; হ্যাঁ, এ যেমন মরে, ও তেমনি মরে; তাদের সকলের শ্বাস এক। পশুর চেয়ে মানুষ কোন প্রাধান্যের অধিকারী নয়, যেহেতু সবই অসার।
20 সকলেই একই স্থানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে—সবকিছু ধুলা থেকে বের হয়, সবকিছু ধুলায় ফিরে যায়।
21 আদমসন্তানদের আত্মা ঊর্ধ্বগামী এবং পশুদের আত্মা ভূতলের দিকে অধোগামী—একথা কে জানে?
22 আমি লক্ষ করলাম, নিজের কর্মসাধনে আনন্দভোগ করা ছাড়া মানুষের আর মঙ্গল নেই, কারণ এটিই তার ভাগ্য। আসলে, তার মৃত্যুর পরে যা ঘটবে, তা দেখবার জন্য কে তাকে চালিত করতে পারবে?