1 যিশু নিজের শিষ্যদের আরও বললেন, 'এমনটি হতে পারে না যে, পদস্খলনের কোন কারণ ঘটবে না, কিন্তু ধিক্ তাকে, যে পদস্খলন ঘটায়।
2 তেমন লোকের গলায় জাঁতাকলের পাথর বেঁধে যদি তাকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হত, তাহলে এই ক্ষুদ্রজনদের একজনের পদস্খলন ঘটানোর চেয়ে তা-ই বরং তার পক্ষে ভাল হত।
3 তোমরা নিজেদের সম্বন্ধে সাবধান থাক। তোমার ভাই যদি কোন অন্যায় করে, তাকে তিরস্কার কর ; কিন্তু সে যদি অনুতাপ করে, তাকে ক্ষমা কর।
4 আর সে যদি দিনে সাতবার তোমার প্রতি অন্যায় করে আর সাতবার তোমার কাছে ফিরে এসে বলে, আমি অনুতপ্ত, তাকে ক্ষমা কর।”
5 প্রেরিতদূতেরা প্রভুকে বললেন, 'আমাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি করুন।'
6 প্রভু বললেন, 'একটা সর্ষে দানার মত বিশ্বাস যদি তোমাদের থাকত, তবে তোমরা এই তুঁত গাছটাকে বলতে পারতে, সমূলে উপড়ে গিয়ে সমুদ্রে নিজেকে বসাও; আর গাছটা তোমাদের কথা মেনে নিত।
7 তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে, যার দাস হাল চাষ করে বা মেষ চরিয়ে মাঠ থেকে ঘরে ফিরে এলে সে তাকে বলবে, এসো, এখনই খেতে বস!
8 বরং তাকে কি একথা বলবে না, আমার খাওয়ার ব্যবস্থা কর, এবং কোমর বেঁধে আমার খাবার । পরিবেশন কর, তারপর তুমি নিজে খাওয়া-দাওয়া করতে পার।
9 দাস যে তার কথামত কাজ করল, সে কি এজন্য তার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ দেখাবে?
10 তেমনি ভাবে তোমাদের যা করতে আদেশ করা হয়েছে, তা পালন করার পর তোমরাও বল, আমরা অনুপযোগী দাস মাত্র, যা করতে বাধ্য ছিলাম, তা-ই করলাম।'
11 যেরুসালেমের দিকে তাঁর সেই পথে এগিয়ে যাওয়ার সময়ে তিনি সামারিয়া ও গালিলেয়ার সীমানা-পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
12 তিনি একটা গ্রামে প্রবেশ করছেন, এমন সময়ে সংক্রামক চর্মরোগে আক্রান্ত দশজন লোক তাঁকে দেখা করতে সামনে এসে পড়ল ; দূরে দাঁড়িয়ে
13 তারা জোর গলায় বলতে লাগল, 'যিশু, গুরুদেব, আমাদের দয়া করুন!'
14 তাদের দেখে তিনি বললেন, যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখাও।' আর যাওয়ার পথে তারা শুচীকৃত হল।
15 তখন তাদের একজন নিজেকে সুস্থ দেখে জোর গলায় ঈশ্বরের গৌরবকীর্তন করতে করতে ফিরে এল,
16 এবং যিশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে লাগল। লোকটি ছিল সামারীয়।
17 তাই যিশু বললেন, 'দশজনেই কি চীকৃত হয়নি? তবে অপর ন'জন কোথায়?
18 এই বিজাতীয় লোকটি ছাড়া আর এমন কাউকেই কি পাওয়া গেল না যে, ঈশ্বরের গৌরবকীর্তন করার জন্য ফিরে আসবে?'
19 তখন তিনি তাকে বললেন, ‘ওঠ, এখন যাও; তোমার বিশ্বাস তোমার পরিত্রাণ সাধন করেছে।'
20 ঈশ্বরের রাজ্য কবে আসবে, ফরিসিরা তাঁর কাছে এই প্রশ্ন রাখলে তিনি উত্তরে তাঁদের বললেন, 'ঈশ্বরের রাজ্য এমনভাবে আসে না যে, তার আসাটা দেখা যেতে পারবে।
21 আর এমন কেউই থাকবে না যে বলবে, দেখ, এখানে! কিংবা, ওখানে! কারণ দেখ, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের মাঝেই উপস্থিত।'
22 তিনি শিষ্যদের আরও বললেন, 'এমন সময় আসবে, যখন তোমরা মানবপুত্রের দিনগুলোর একটা দিন মাত্রও দেখতে বাসনা করবে, কিন্তু দেখতে পাবে না।
23 তখন লোকেরা তোমাদের বলবে, দেখ, ওখানে! দেখ, এখানে ! যেয়ো না, তাদের পিছু পিছু যেয়ো না;
24 কারণ বিদ্যুৎ-ঝলক যেমন আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্যন্ত হঠাৎ জ্বলে ওঠে, মানবপুত্র নিজের দিনে ঠিক তেমনি হবেন।
25 কিন্তু আগে তাঁকে বহু যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে ও এই প্রজন্মের মানুষদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হতে হবে।
26 কিংবা, নোয়ার সেই দিনগুলিতে যেমন ঘটেছিল, মানবপুত্রের দিনগুলিতেও সেইমত ঘটবে:
27 জাহাজে নোয়ার প্রবেশ দিন পর্যন্ত লোকদের খাওয়া-দাওয়া ও বিয়ে করা-বিয়ে দেওয়া চলছিল; পরে বন্যা এসে সকলকে ধ্বংস করে ফেলল ।
28 কিংবা লোটের সেই দিনগুলিতেও যেমন ঘটেছিল : লোকদের খাওয়া-দাওয়া, কেনা-বেচা, গাছ পোঁতা ও বাড়ি গড়া চলছিল;
29 কিন্তু যেদিন লোট সদোম ছেড়ে চলে গেলেন, সেদিন স্বর্গ থেকে আগুন ও গন্ধক বর্ষিত হয়ে সকলকে ধ্বংস করে ফেলল।
30 আচ্ছা, মানবপুত্র যেদিন আত্মপ্রকাশ করবেন, সেদিনেও ঠিক সেইমত ঘটবে।
31 সেদিন যে কেউ ছাদের উপরে থাকবে ও তার জিনিসপত্র ঘরে থাকবে, সে তা জড় করার জন্য নিচে না নেমে আসুক; তেমনি যে কেউ মাঠে থাকবে, সেও পিছনে না ফিরে যাক।
32 লোটের স্ত্রীর কথা মনে রেখ!
33 যে কেউ নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করে, সে তা হারাবে; আর যে কেউ প্রাণ হারায়, সে তা বাঁচিয়ে রাখবে।
34 আমি তোমাদের বলছি, সেই রাতে দু'জন লোক এক বিছানায় থাকবে : একজনকে নিয়ে যাওয়া হবে আর একজনকে ফেলে রাখা হবে।
35 36 37 তারা তখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'প্রভু, কোথায়?' তিনি তাঁদের বললেন, 'যেখানে দেহ থাকে, সেখানে শকুনও জড় হবে।