1 আলেফ হায়, সোনা কেমন নিস্তেজ হয়েছে, খাঁটি সোনা কেমন বিকৃত হয়েছে! পবিত্র পাথরগুলো প্রতিটি পথের মাথায় বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে আছে।
2 বহুমূল্য সেই সিয়োন-সন্তানেরা, যারা খাঁটি সোনার তুল্য, হায়, তারা মাটির পাত্রের মত, কুমোরের হাতে গড়া বস্তুরই মত গণিত!
3 শিয়ালেও স্তন দেয়, নিজেদের বাচ্চাদের দুধ খাওয়ায়, কিন্তু আমার আপন জাতি-কন্যা নিষ্ঠুরা হয়েছে মরুপ্রান্তরের উটপাখির মত।
4 দুধের শিশুর জিহ্বা পিপাসায় তালুতে লেগে গেছে ; বালক-বালিকা চায় রুটি, কিন্তু তাদের তা দেবে এমন কেউ নেই।
5 যারা উৎকৃষ্ট খাদ্য খেত, তারা এখন রাস্তায় রাস্তায় সম্পূর্ণই নিঃসঙ্গ ; সিঁদুরে-লাল দামী কাপড়ে যাদের লালন-পালন করা হত, তারা এখন সারের ঢিপি আঁকড়ে ধরে আছে।
6 সত্যি, আমার আপন জাতি-কন্যার শঠতা বড়, তা সেই সদোমের পাপের চেয়েও বড়, যে সদোম এক নিমেষেই উৎপাটিত হয়েছিল, অথচ তার বিরুদ্ধে কারও হাত বাড়ানো হয়নি।
7 তার জনপ্রধানেরা একসময় তুষারের চেয়ে উজ্জ্বল, দুধের চেয়ে শুভ্রই ছিলেন ; প্রবালের চেয়ে রক্তলাল ছিল তাদের অঙ্গ, নীলকান্তমণির মতই ছিল তাঁদের কান্তি।
8 এখন কালির চেয়েও কালো হয়ে পড়েছে তাঁদের মুখ, রাস্তা-ঘাটে আর চেনা যায় না তাঁদের ; তাঁদের চামড়া হাড়ে লেগে গেছে, কাঠের মতই শুষ্ক হয়েছে।
9 দুর্ভিক্ষে যারা মারা পড়ছে, ভূমির ফলের অভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে ক্ষয় হচ্ছে যারা, তাদের চেয়ে তারাই সুখী, যারা খড়ের আঘাতে পড়ল।
10 স্নেহময়ী স্ত্রীলোকদের হাত তাদের নিজেদের শিশুদের রান্না করে; আমার আপন জাতি-কন্যার সর্বনাশের দিনে সেই শিশুরাই তাদের খাদ্য !
11 প্রভু তাঁর আপন ক্রোধ অবাধে ঝেড়ে দিয়েছেন, ঢেলে দিয়েছেন তাঁর জ্বলন্ত কোপ ; তিনি সিয়োনে আগুন জ্বালিয়েছেন, আর তা গ্রাস করছে তার ভিত্তিমূল।
12 পৃথিবীর রাজারা ও জগদ্বাসী সকল লোক এমনটি বিশ্বাস করত না যে, কোন বিপক্ষ বা শত্রু প্রবেশ করতে পারবে যেরুসালেম দ্বার দিয়ে।
13 এর কারণ হল তার নবীদের ও তার যাজকদের অপরাধ ; তারা যে তার অন্তঃস্থলে ঝরিয়েছে ধার্মিকদের রক্ত।
14 তারা অন্ধের মত রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় রক্তে এতই কলুষিত হয়ে যে, তাদের পোশাক স্পর্শ করতে লোকে সাহস করে না।
15 তাদের উদ্দেশ করে লোকে চিৎকার করে বলে : ‘পথ ছাড়! অশুচি! পথ ছাড়, পথ ছাড়, স্পর্শ করো না!” তারা পালাচ্ছে, উদ্দেশবিহীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু জাতিগুলির মাঝে লোকে বলছে : “তারা আমার মধ্যে আর বাসিন্দা হতে পারবে না।'
16 প্রভুর শ্রীমুখ তাদের বিক্ষিপ্ত করেছে, তাদের দিকে তিনি আর তাকাবেন না; যাজকদের প্রতি করা হয়নি কোন পক্ষপাত, প্রবীণদের প্রতিও দয়া দেখানো হল না।
17 এখন আমাদের চোখও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে অসার সাহায্যের প্রত্যাশায়। আমাদের উচ্চ মিনার থেকে আমরা এমন জাতির দিকে চেয়ে দেখতাম, যারা আমাদের রক্ষা করতে অক্ষমই ছিল।
18 শত্রুরা আমাদের পদক্ষেপের পিছু পিছু এমন ধাওয়া করল যে, আমরা আমাদের রাস্তা-ঘাটে আর বেড়াতে পারছিলাম না। ‘আমাদের শেষকাল সন্নিকট আমাদের আয়ু পূর্ণ হয়েছে, হ্যাঁ, আমাদের শেষকাল এবার উপস্থিত!'
19 যারা আমাদের ধাওয়া করছিল, তারা আকাশের ঈগলের চেয়ে দ্রুতগামী ছিল : তারা পর্বতে পর্বতে আমাদের পিছু পিছু ধাওয়া করত, মরুপ্রান্তরে আমাদের জন্য পেতে দিত ফাঁদ।
20 আমাদের নিজেদের প্রাণ-নিশ্বাস যিনি, প্রভুর সেই তৈলাভিষিক্তজন যিনি, তিনি ধরা পড়লেন তাদের ফাঁদে, সেই তিনি, যাঁর বিষয়ে আমরা বলতাম : ‘তাঁর ছায়ায় আমরা জাতিগুলির মাঝে জীবনযাপন করব।'
21 হে উজ-নিবাসিনী এদোম-কন্যা, মেতে ওঠ, আনন্দ কর ; তোমার কাছেও পানপাত্রটা আসবে, তুমি মত্তা হবে, তোমার উলঙ্গতা অনাবৃত হবে।
22 সিয়োন-কন্যা, তোমার শঠতার দণ্ড শেষ হয়েছে ; তিনি তোমাকে বন্দিদশায় আর ফেলবেন না ; কিন্তু, হে এদোম-কন্যা, তিনি তোমার শঠতার যোগ্য দণ্ড দেবেন, অনাবৃত করবেন তোমার যত পাপ।