Index

দানিয়েল - Chapter 3

1 নেবুকাড্রেজার রাজা একটা সোনার মূর্তি তৈরি করালেন, তা ঘাট হাত উচ্চ ও ছয় হাত চওড়া; তা তিনি বাবিলন প্রদেশের দুরা সমভূমিতে দাঁড় করালেন।
2 পরে নেবুকাদ্রেজার রাজা সেই যে মূর্তি দাঁড় করিয়েছিলেন, তার উৎসর্গীকরণ উপলক্ষে উপস্থিত হবার জন্য ক্ষিতিপাল, প্রদেশপাল, গণশাসক, মন্ত্রী, কোষাধ্যক্ষ, বিচারকর্তা, ব্যবস্থাপক, অধিপতি ও প্রদেশগুলোর সমস্ত শাসনকর্তাকে ডাকিয়ে সমবেত করলেন।
3 মূর্তি-উৎসর্গীকরণ উপলক্ষে ক্ষিতিপালেরা, প্রদেশপালেরা, গণশাসকেরা, বিচারকর্তারা, কোষাধ্যক্ষেরা, ব্যবস্থাপকেরা, অধিপতিরা ও প্রদেশগুলোর সমস্ত শাসনকর্তা এলেন এবং নেবুকাদেজার রাজার দাঁড় করানো সেই মূর্তির সামনে দাঁড়ালেন।
4 তখন ঘোষক উচ্চকণ্ঠে বলল : 'হে জাতিসকল, দেশসকল ও নানা ভাষার মানুষসকল, তোমাদেরই উদ্দেশ করে এই আজ্ঞা জারি করা হচ্ছে:
5 যে সময়ে তোমরা শিঙা, বাঁশি, বীণা, চতুস্তন্ত্রী যন্ত্র, পরিবাদিনী, মৃদঙ্গ ও সবরকম বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনবে, সেসময়ে উপুড় হয়ে নেবুকাদ্নেজার রাজার দাঁড় করানো সোনার মূর্তির উদ্দেশে প্রণাম জানাবে।
6 যে কেউ উপুড় হয়ে প্রণাম করবে না, সেই মুহূর্তেই তাকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে ফেলে দেওয়া হবে।''
7 তাই সমস্ত লোক যখন শিঙা, বাঁশি, বীণা, চতুস্তন্ত্রী যন্ত্র, পরিবাদিনী, মৃদঙ্গ ও সবরকম বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনল, তখন সমস্ত জাতি, দেশ ও ভাষার মানুষ উপুড় হয়ে নেবুকাম্নেজার রাজার দাঁড় করানো সোনার মূর্তির উদ্দেশে প্রণাম জানাল।
8 কিন্তু সেই সময়ে কয়েকজন কাদীয় ইহুদীদের বিরুদ্ধে শঠতাপূর্ণ অভিযোগ আনবার জন্য এগিয়ে এল।
9 তারা নেবুকাদ্নেজার রাজাকে বলল : 'হে রাজন, চিরজীবী হোন!
10 হে রাজন, আপনি এমন রাজপত্র জারি করেছেন যা অনুসারে যে কেউ শিঙা, বাঁশি, বীণা, চতুস্তন্ত্রী যন্ত্র, পরিবাদিনী, মৃদঙ্গ ও সবরকম বাদ্যযন্ত্রের সুর শুনবে, সে উপুড় হয়ে ওই সোনার মূর্তির উদ্দেশে প্রণাম জানাবে ;
11 এবং যে কেউ উপুড় হয়ে প্রণাম করবে না, তাকে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে ফেলে দেওয়া হবে।
12 আচ্ছা, এমন কয়েকজন ইহুদী লোক আছে যাদের হাতে আপনি বাবিলন প্রদেশের ব্যবস্থাপনার ভার দিয়েছেন, অর্থাৎ সেই শাস্ত্রাক, মেশাক ও আবেদ্রেগো : তারা, হে রাজন, আপনার আজ্ঞা মানে না; তারা আপনার দেব-দেবীর সেবাও করে না, এবং আপনি যে সোনার মূর্তি দাঁড় করিয়েছেন, তাকেও প্রণাম করে না।
13 তখন নেবুকাদেজার ক্রুদ্ধ ও রুষ্ট হয়ে উঠে শাদ্রাক, মেশাক ও আবেদেগোকে আনতে আদেশ দিলেন, আর তাঁদের রাজার সামনে আনা হল।
14 নেবুকাদেজার তাঁদের বললেন, “হে শাস্ত্রাক, মেশাক ও আবেন্নেগো, এ কি সত্য যে, তোমর আমার দেব-দেবীরও সেবা কর না, আমার দাঁড় করানো সোনার মূর্তিকেও প্রণাম কর না?
15 আচ্ছা, শিঙা, বাঁশি, বীণা, চতুস্তন্ত্রী যন্ত্র, পরিবাদিনী, মৃদঙ্গ ও সবরকম বাদ্যযন্ত্রের সুর শোনামাত্র যদি তোমরা উপুড় হয়ে আমার তৈরী সোনার মূর্তিকে প্রণাম করতে প্রস্তুত হও, ভালই, কিন্তু যদি প্রণাম না কর, তবে সেই মুহূর্তেই জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে তোমাদের ফেলে দেওয়া হবে; তখন এমন কোন দেবতা আমার হাত থেকে তোমাদের নিস্তার করবে?'
16 শাদ্রাক, মেশাক ও আবেদ্নেগো উত্তরে রাজাকে বললেন, 'হে নেবুকাল্লেজার, আপনাকে এই কথার উত্তর দেওয়া আমাদের পক্ষে কোন প্রয়োজন নেই;
17 আমরা যাঁর সেবা করি, আমাদের সেই পরমেশ্বর যদি জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ড ও আপনার হাত থেকে আমাদের নিস্তার করতে সক্ষম, তবে, হে রাজন, তিনি আমাদের নিস্তার করবেন।
18 কিন্তু যদিও তিনি না করেন, তবু হে রাজন, জেনে নিন, আমরা আপনার দেব-দেবীরও সেবা করব না, আপনার দাঁড় করানো সোনার মূর্তিকেও প্রণাম করব না।'
19 তখন নেবুকাদ্রেজার ক্রোধে জ্বলে উঠলেন ও শাস্ত্রাক, মেশাক ও আবেদ্রেগোর বিরুদ্ধে মুখ আরও ভয়ঙ্কর করলেন; তিনি সাধারণ তাপের চেয়ে অগ্নিকুণ্ডের তাপ সাতগুণ বাড়াতে হুকুম দিলেন,
20 এবং তাঁর সৈন্যদের সবচেয়ে বলিষ্ঠ যোদ্ধার মধ্যে কয়েকজনকে আজ্ঞা করলেন, যেন তারা শাদ্রাক, মেশাক ও আবেদেগোকে বেঁধে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে ফেলে দেয়।
21 তখন ওই যুবকদের, জামা, চাদর, পোশাক, পাগড়ি ইত্যাদি বস্ত্র পরা অবস্থায় বেঁধে জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে ফেলে দেওয়া হল।
22 কিন্তু যে লোকেরা শাদ্রাক, মেশাক ও আবেদ্নেগোকে অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে ফেলে দেওয়ার জন্য রাজার কড়া হুকুম অনুসারে তা অধিক উত্তপ্ত করে তুলেছিল, তারা নিজেরা সেই একই মুহূর্তে আগুনের শিখায় মারা পড়ল,
23 যে মুহূর্তে শাদ্রাক, মেশাক ও আবেদ্রেগোও বাঁধা অবস্থায় জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে পড়ছিলেন ;
24 তাঁরা অগ্নিশিখার মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন, ঈশ্বরের প্রশংসা করছিলেন ও প্রভুকে ধন্য বলছিলেন।
25 আজারিয়া উঠে দাঁড়িয়ে আগুনের মধ্যে জোর গলায় এই বলে প্রার্থনা করলেন :
26 ধন্য তুমি, প্রশ্ন, আমাদের পিতৃপুরুষদের পরমেশ্বর, প্রশংসার যোগ্য ও গৌরবময় তোমার নাম চিরকাল।
27 তুমি যা কিছু করেছ, তাতে তুমি ন্যায়শীল; তোমার সকল কর্ম সত্যময়, তোমার সমস্ত পথ সরল, তোমার সকল বিচার ন্যায্য।
28 আমাদের উপরে, ও আমাদের পিতৃপুরুষদের পবিত্র নগরী সেই যেরুসালেমের উপরে তুমি যা নামিয়ে এনেছ, তাতে তুমি যে রায় দিয়েছ, তা ন্যায্য ; কেননা আমাদের পাপ- অপরাধের কারণে তুমি সত্য ও ন্যায় বিচার মতেই ব্যবহার করেছ আমাদের প্রতি।
29 কারণ আমরা পাপ করেছি, তোমাকে ত্যাগ করে অন্যায় করেছি, নিতান্তই পাপ করেছি। তোমার আজ্ঞাগুলির প্রতি আমরা বাধ্য হইনি,
30 সেগুলিকে পালনও করিনি, তাও করিনি, যা তুমি আমাদের মঙ্গলার্ধে আমাদের করতে আজ্ঞা করেছিলে।
31 হ্যাঁ, যা কিছু নামিয়ে এনেছ আমাদের উপর, যা কিছু করেছ আমাদের প্রতি, ন্যায়বিচার মতেই তা তুমি করেছ :
32 তুমি আমাদের তুলে দিয়েছ এমন শত্রুদের হাতে, যারা ধর্মহীন, দুর্জনদের মধ্যে যারা সবচেয়ে মন্দ, এমন অসৎ রাজারও হাতে আমাদের তুলে দিয়েছ, সারা পৃথিবীর উপরে সবচেয়ে দুষ্কর্মা যে রাজা।
33 এখন আমরা আমাদের নিজেদের মুখ খুলতেও যোগ্য নই, লজ্জা ও অপমান, তা-ই তোমার দাসদের প্রাপ্য, তাদের নিয়তি, যারা তোমার উপাসক।
34 তোমার নামের দোহাই আমাদের ত্যাগ করো না চিরকাল ধরে, তোমার সন্ধি ভঙ্গ করো না;
35 তোমার প্রিয়জন আব্রাহাম, তোমার দাস ইসায়াক, তোমার পবিত্রজন ইস্রায়েলের খাতিরে আমাদের কাছ থেকে তোমার দয়া ফিরিয়ে নিয়ো না ;
36 তাঁদের তুমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে, তাঁদের বংশ তুমি বাড়াবে আকাশের তারকারাজির মত, সমুদ্রতীরে বালুকণার মত।
37 প্রভু, সকল জাতির চেয়ে আমরা এখন হয়ে গেছি ক্ষুদ্রতম জাতি, আমাদের পাপরাশির কারণে আমরা এখন পৃথিবী জুড়ে অবমাননার পাত্র।
38 এখন আমাদের জননায়ক নেই, নবী নেই, নেতা নেই, আহুতি নেই, যজ্ঞ নেই, অর্ঘ্য নেই, ধূপ নেই, নেই এমন এক স্থান যেখানে তোমাকে প্রথমফসল অর্পণ করে আমরা তোমার প্রসন্নতা জয় করতে পারি।
39 আমাদের চূর্ণ হৃদয়, আমাদের অনুতপ্ত প্রাণ যেন তোমার কাছে গ্রহণীয় হয় ভেড়া ও বৃষের আহুতির মত, সহস্র নধর মেষশাবকের মত;
40 তেমনই হোক আজ তোমার সম্মুখে আমাদের যজ্ঞ, তোমার গ্রহণীয় হোক, কারণ যারা তোমাতে ভরসা রাখে, তারা আশাভ্রষ্ট হবে না।
41 আমরা এখন আমাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে তোমার অনুসরণ করি, তোমাকে ভয় করি, পুনরায় তোমার শ্রীমুখ অন্বেষণ করি: আমাদের করো না গো লজ্জার পাত্র,
42 তোমার বদান্যতা অনুসারেই বরং ব্যবহার কর আমাদের প্রতি, তোমার দয়ারই মহত্ত্ব অনুসারে ব্যবহার কর।
43 তোমার আশ্চর্য কর্মকীর্তি দ্বারা আমাদের উদ্ধার কর, গৌরবমণ্ডিত কর গো প্রশ্ন তোমার আপন নাম।
44 তারাই নতমুখ হোক, যারা তোমার দাসদের অনিষ্ট সাধন করে ; অপমানিত হোক তারা, সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হোক, তাদের শক্তি চূর্ণ হোক !
45 তারা জানুক যে, তুমিই একমাত্র প্রভু পরমেশ্বর, তুমিই সারা পৃথিবীর উপরে গৌরবময়।”
46 এদিকে রাজার যে দাসেরা এই তিন যুবককে অগ্নিকুণ্ডে ফেলে দিয়েছিল, তারা আদৌ ক্ষান্ত হল না, বরং তেল, খড়, আলকাতরা ও শুকনা ঘাস দিয়ে অগ্নিকুণ্ডের আগুন বাড়াতে থাকল,
47 যে পর্যন্ত আগুনের শিখা অগ্নিকুণ্ডের উপরে ঊনপঞ্চাশ হাত উঠল
48 ও বাইরে ছড়িয়ে পড়ে অগ্নিকুণ্ডের চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা সেই সকল কাদীয়দের পুড়িয়ে ফেলল।
49 কিন্তু প্রভুর দূত আজারিয়ার ও তাঁর সঙ্গীদের পাশে অগ্নিকুণ্ডে নেমে এলেন ; তিনি আগুনের শিখা তাদের কাছ থেকে বাইরের দিকে সরিয়ে দিলেন
50 এবং অগ্নিকুণ্ডের ভিতরটা এমন স্থান করলেন, যেখানে শিশিরপূর্ণ বাতাস বইত। তাতে আগুন তাদের আদৌ স্পর্শ করল না, তাদের কোন ক্ষতি বা অসুবিধাও ঘটাল না।
51 তখন সেই তিনজন অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে একসুরে ঈশ্বরের স্তুতিগান ও গৌরবকীর্তন করতে লাগলেন ও তাঁকে ধন্য ব'লে বলে উঠলেন :
52 ধন্য তুমি, প্রভু, আমাদের পিতৃপুরুষদের পরমেশ্বর, প্রশংসা ও মহাবন্দনার যোগ্য তুমি চিরকাল। ধন্য তোমার গৌরবময় পবিত্র নাম, মহাপ্রশংসা ও মহাবন্দনার যোগ্য তুমি চিরকাল।
53 ধন্য তুমি তোমার গৌরবময় পবিত্র মন্দির-মাঝে, মহাস্তব ও মহাগৌরবের যোগ্য তুমি চিরকাল।
54 ধন্য তুমি তোমার রাজাসনে, স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনার যোগ্য তুমি চিরকাল।
55 ধন্য তুমি, খেরুর বাহনে আসীন হয়ে তুমি যে সাগরতল তলিয়ে দেখ, প্রশংসা ও গৌরবের যোগ্য তুমি চিরকাল।
56 ধন্য তুমি আকাশমণ্ডলের গগনতলে, স্তবস্তুতি ও গৌরবের যোগা তুমি চিরকাল।
57 প্রভুর নিখিল সৃষ্টি, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
58 প্রভুর দূতবৃন্দ, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
59 আকাশমণ্ডল, বল প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
60 নম্র-শীর্ষের জলরাশি, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
61 প্রভুর শক্তিবাহিনী, বল, প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
62 সূর্য চন্দ্র, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
63 আকাশের তারকারাজি, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
64 বৃষ্টিধারা ও নিশাতাল, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
65 ঝঞ্ঝা-বাতাস, বল: ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
66 অগ্নি ও উত্তাপ, বল প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
67 শীত ও উষ্ণ, বল : প্রশ্ন ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
68 শিশির ও তুহিন, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
69 হিম ও নীহার, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
70 বরফ ও তুষার, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
71 দিন ও রাত্রি, বল : প্রশ্ন ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
72 আলো ও অন্ধকার, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
73 মেঘ ও বিদ্যুৎ, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
74 বলুক পৃথিবী, প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
75 পর্বত উপপর্বত, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
76 ভূমির উদ্ভিদ, বল : প্রশ্ন ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
77 জলের উৎসধারা, বল, প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
78 সমুদ্র-সাগর ও নদনদী, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
79 জলদানব ও জলচর প্রাণী, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
80 আকাশের পাখি, বল : প্রশ্ন ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
81 পোষা ও বন্য পশু, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
82 মানবকুল, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
83 ইস্রায়েল বলুক : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
84 প্রভুর যাজকবর্গ, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
85 প্রভুর সেবকবৃন্দ, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
86 ধার্মিকদের প্রাণ ও আত্মা, বল প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
87 পুণ্যজন ও নম্রহৃদয় সকল, বল : প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল।
88 হানানিয়া, আজারিয়া, মিশায়েল, বল: প্রভু ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর চিরকাল, কারণ তিনি পাতাল থেকে আমাদের উদ্ধার করলেন, মৃত্যুর হাত থেকে আমাদের ত্রাণ করলেন, জ্বলন্ত অগ্নিশিখার মধ্য থেকে আমাদের নিস্তার করলেন, আগুনের হাত থেকে আমাদের মুক্ত করলেন।
89 প্রভুকে ধন্যবাদ জানাও, তিনি যে মঙ্গলময়, তাঁর দয়া যে চিরস্থায়ী।
90 প্রভুভীরু সকল, দেবতাদের দেবতাকে বল ধন্য, তাঁর স্তবস্তুতি ও মহাবন্দনা কর, তাঁর দয়া যে চিরস্থায়ী।
91 নেবুকাম্নেজার রাজা স্তম্ভিত হয়ে হঠাৎ পায়ে উঠে দাঁড়ালেন; তাঁর মন্ত্রীদের তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, 'আমরা কি তিনজন মানুষকে বাঁধা অবস্থায় আগুনের মধ্যে ফেলে দিইনি?' উত্তরে তারা বলল, 'হ্যাঁ, মহারাজ।'
92 তখন তিনি বলে চললেন, 'দেখ, আমি চারজন মানুষকে দেখতে পাচ্ছি; তারা বাঁধন-মুক্ত হয়ে আগুনের মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছে, আর তাদের কোন ক্ষতি হচ্ছে না; এমনকি চতুর্থজনের চেহারা দেবপুত্রেরই মত।'
93 তখন নেবুকাদ্নেজার সেই জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডের মুখের কাছে এগিয়ে গিয়ে বললেন, 'হে পরাৎপর ঈশ্বরের দাস শাস্ত্রাক, মেশাক ও আবেদেগো, বেরিয়ে এসো, এখানে এসো। তখন শাস্ত্রাক, মেশাক আবেদেগো আগুনের মধ্য থেকে বেরিয়ে এলেন।
94 পরে ক্ষিতিপাল, প্রদেশপাল, গণশাসক, ও রাজমন্ত্রীরা ওই তিনজনকে লক্ষ করতে সমবেত হলেন, আর দেখলেন, আগুন তাঁদের শরীরের উপর একটু প্রভাবও ফেলতে পারেনি : তাঁদের মাথার একটা চুল পর্যন্তও পোড়েনি, তাঁদের পোশাকেও আগুনের স্পর্শের কোন চিহ্ন নেই, তাদের দেহে আগুনের গন্ধও নেই।
95 নেবুকাদ্রেজার বলে উঠলেন, 'ধন্য শাস্ত্রাকের, মেশাকের ও আবেল্লেগোর ঈশ্বর! তিনি তাঁর দূত পাঠিয়ে তাঁর সেই দাসদের নিস্তার করলেন যারা তাঁর উপরে আস্থা রেখে রাজার আজ্ঞা অমান্য করেছে ও নিজেদের দেহ সঁপে দিয়েছে, যেন তাদের ঈশ্বর ছাড়া অন্য কোন দেবতার সেবা ও পূজা করতে না হয় ।
96 তাই আমি এই আজ্ঞা জারি করছি যে, যে কোন দেশ, জাতি ও ভাষার মানুষই হোক না কেন, যে কেউ শাস্ত্রাক, মেশাক ও আবেদ্রেগোর ঈশ্বরের বিরুদ্ধে নিন্দাজনক একটা কথাও উচ্চারণ করবে, তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলা হোক ও তার বাড়ি সারের ঢিপি করা হোক; কারণ তেমন উদ্ধারকর্ম সাধন করার সামর্থ্য আর কোন দেবতার নেই।'
97 তখন রাজা বাবিলন প্রদেশে শাদ্রাক, মেশাক ও আবেস্ত্রেগোকে উচ্চপর্যায়ে উন্নীত করলেন।
98 সমগ্র পৃথিবী-নিবাসী সকল জাতি, দেশ ও ভাষার মানুষের প্রতি নেবুকাদ্রেজার রাজার বিজ্ঞাপন: তোমাদের মহাশান্তি হোক !
99 পরাৎপর পরমেশ্বর আমার পক্ষে যে সকল চিহ্ন ও আশ্চর্য কর্মকীর্তি সাধন করেছেন, তা আমি প্রচার করা বিহিত মনে করলাম।
100 আহা ! তাঁর সমস্ত চিহ্ন কেমন মহান! কেমন পরাক্রমশালী তাঁর আশ্চর্য কীর্তিকলাপ : তাঁর রাজ্য চিরকালীন রাজ্য, ও তাঁর কর্তৃত্ব যুগযুগস্থায়ী।