1 এই সমস্ত কিছুর পরে আমি যেন স্বর্গে বিরাট এক জনতার উদাত্ত কণ্ঠস্বর শুনতে পেলাম : তারা বলছিল :
2 "আল্লেলুইয়া! পরিত্রাণ, গৌরব ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই ; কেননা সত্যময়, ন্যায্যই তাঁর বিচারসকল। যে মহাবেশ্যা নিজের বেশ্যাচারে পৃথিবীকে ভ্রষ্ট করছিল, তিনি তার বিচার সম্পন্ন করেছেন, তার হাত থেকে তাঁর নিজের দাসদের রক্তপাতের যোগ্য পরিশোধ নিয়েছেন।'
3 দ্বিতীয়বারের মত তারা বলে উঠল, ‘আল্লেলুইয়া! তার ধোঁয়া উর্ধ্বে ওঠে যুগে যুগে চিরকাল!
4 তখন সেই চব্বিশজন প্রবীণ ও চার প্রাণী প্রণিপাত করে এই বলে সিংহাসনে সমাসীন ঈশ্বরের সামনে প্রণিপাত করলেন: 'আমেন, আল্লেলুইয়া!'
5 সিংহাসন থেকে জেগে উঠে এক কণ্ঠস্বর বলে উঠল : ‘আমাদের ঈশ্বরের প্রশংসাগান কর, তাঁর সকল দাস, তোমরাও, ছোট-বড় তাঁকে ভয় কর যারা।'
6 আর আমি শুনতে পেলাম যেন বিরাট এক জনতার কণ্ঠস্বর, যেন বিপুল জলরাশির ধ্বনি ও প্রকাণ্ড বজ্রনাদ ঘোষণা করছে : “আল্লেলুইয়া! আমাদের সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সেই প্রভু রাজ্যভার গ্রহণ করেছেন।
7 এসো, আনন্দ করি, করি উল্লাস, করি তাঁর গৌরবগান। কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এসে গেছে, তাঁর কনে নিজেকে সজ্জিতা করেছে।
8 তাকে বিশুদ্ধ উজ্জ্বল ক্ষোম-বসন পরিধান করতে দেওয়া হয়েছে।” আসলে ক্ষোম-বসন হল পরিব্রজনদের সৎকর্ম।
9 তখন স্বর্গদূত আমাকে বললেন : 'লেখ, সুখী তারা, যারা মেষশাবকের বিবাহভোজে নিমন্ত্রিত!' তিনি এও বললেন, 'এই সমস্ত কিছু স্বয়ং ঈশ্বরেরই প্রকৃত বাণী।'
10 তখন আমি তাঁর আরাধনা করার জন্য তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়লাম; কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, 'সাবধান, এমনটি করো না; আমি তোমার সহদাস, ও তোমার সেই ভাইদের সহদাস, যারা যিশুর সাক্ষ্য বহন করে। ঈশ্বরেরই সম্মুখে প্রণিপাত কর।' যিশুর যে সাক্ষ্য, তা হল নবীয় বাণীর প্রেরণা।
11 আর আমি দেখতে পেলাম, স্বর্গলোক উন্মুক্ত; আর দেখ, সাদা একটা ঘোড়া ; যিনি তার পিঠে আসীন, তিনি বিশ্বস্ত ও সত্যময় নামে অভিহিত; তিনি ধর্মময়তার সঙ্গে বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন।
12 তাঁর চোখ দু'টো অগ্নিশিখা, তাঁর মাথায় অনেক কিরীট, এবং নিজ দেহে তিনি এমন এক নামে চিহ্নিত, যা তিনি ছাড়া অন্য কেউ জানে না।
13 তিনি রক্তে ভেজানো এক আলোয়ানে জড়ানো ; তাঁর নাম : ঈশ্বরের বাণী!
14 স্বর্গীয় যত সেনাদল শুচিশুভ্র ক্ষোমের কাপড়ে সজ্জিত হয়ে সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর অনুসরণ করে।
15 তাঁর মুখ থেকে তীক্ষ্ণ একটা খড়া নির্গত, যেন তা দ্বারা তিনি জাতিগুলিকে আঘাত করেন। তিনি লৌহদণ্ড দ্বারা তাদের শাসন করবেন, ও সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের আঙুররস মাড়াইকুণ্ডে মাড়াই করবেন।
16 তাঁর আলোয়ানে ও তাঁর উরুতে এই নাম লেখা আছে : রাজার রাজা ও প্রভুর প্রভু।
17 পরে আমি দেখতে পেলাম, এক স্বর্গদূত সূর্যের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন মাঝ-আকাশে যে সকল পাখি উড়ে যাচ্ছে, তিনি উদাত্ত কণ্ঠে চিৎকার ; ক'রে সেগুলোকে উদ্দেশ করে বললেন, 'এসো, ঈশ্বরের মহাভোজে জড় হও :
18 রাজাদের দেহমাংস, সেনাপতিদের দেহমাংস, মহাবীরদের দেহমাংস, অশ্ব ও অশ্বারোহীদের দেহমাংস, এবং স্বাধীন মানুষ ও ক্রীতদাস, ছোট ও বড় সকল মানুষেরই দেহমাংস খাও।'
19 তখন আমি দেখতে পেলাম, ঘোড়ার পিঠে যিনি আসীন, তাঁর বিরুদ্ধে ও তাঁর সেনাদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা ও তাদের সেনাদল জড় আছে।
20 কিন্তু পশুটা ধরা পড়ল, আর তার সঙ্গে ধরা পড়ল সেই নকল নবী, যে তার সামনে সেই সমস্ত চিহ্নকর্ম সাধন করে সেই সকল মানুষকে ভুলিয়েছিল, যারা পশুর প্রতীক-চিহ্ন ধারণ করেছিল ও তার মূর্তির সামনে প্রণিপাত করেছিল; পশু ও নকল নবী, দু'জনকেই জিয়ন্তে জ্বলন্ত গন্ধকময় অগ্নিহ্রদে ছুড়ে ফেলা হল।
21 বাকি সকলকে সেই অশ্বারোহীর মুখ থেকে নির্গত খড়্গা দ্বারা সংহার করা হল ; এবং সকল পাখি তৃপ্তির সঙ্গে তাদের দেহমাংস খেল।