Index

প্রত্যাদেশ - Chapter 17

1 তখন যে সপ্ত স্বর্গদূতদের হাতে সেই সাতটা বাটি ছিল, তাঁদের একজন এগিয়ে এসে আমাকে উদ্দেশ করে বললেন : 'কাছে এসো, আমি তোমাকে দেখাব সেই মহাবেশ্যার বিচারদণ্ড, যে বেশ্যা বিপুল জলরাশির উপরে আসীনা।
2 পৃথিবীর রাজারা যার ব্যভিচারের সঙ্গী হয়েছে, এবং পৃথিবীর অধিবাসীরা যার বেশ্যাচারের আঙুররসে মত্ত হয়েছে।'
3 স্বর্গদূত আত্মায় আমাকে এক মরুপ্রান্তরে তুলে নিয়ে গেলেন, আর সেখানে আমি এক নারীকে দেখলাম, যে উজ্জ্বল-লাল রঙের এমন পশুর পিঠে আসীনা যার সাতটা মাথা ও দশটা শিং ও যার সারা গায়ে ঈশ্বরনিন্দাজনক যত নাম লেখা আছে।
4 নারী নিজেও বেগুনি ও উজ্জ্বল-লাল রঙের পোশাক পরে আছে, সোনার ও মণিমুক্তার গয়নায় ভূষিতা, এবং তার হাতে রয়েছে একটা সোনার পানপাত্র, যা তার যত জঘন্য কর্ম ও তার বেশ্যাচারের যত মলিনতায় ভরা;
5 তার কপালে একটা নাম লেখা আছে : রহস্য, অর্থাৎ মহতী বাবিলন, বেশ্যাদের জননী ও পৃথিবীর যত জঘন্য কর্মের জননী।
6 আমি লক্ষ করলাম, নারীটা মাতাল – পবিত্রজনদের রক্তে ও যিশুর সাক্ষীদের রক্তেই মাতাল। তাকে দেখে আমি খুবই আশ্চর্য হলাম।
7 সেই স্বর্গদূত আমাকে বললেন : “আশ্চর্য হওয়ার কী আছে? আমি সেই নারীর ও তার বাহনের, অর্থাৎ সেই পশু যার সাতটা মাথা ও দশটা শিং আছে, ওদের রহস্য তোমাকে জানিয়ে দিচ্ছি।
8 যে পশুকে তুমি দেখলে, সে ছিল, কিন্তু এখন আর নেই; সে অতল গহ্বর থেকে উঠে আসবে, কিন্তু সর্বনাশের দিকেই যাবে। আর পৃথিবীর অধিবাসী যত লোকের নাম জগৎপত্তনের সময় থেকে জীবন-পুস্তকে লেখা নেই, তারা যখন দেখবে সেই পশুকে যে ছিল, এখন আর নেই, পরে আবার হাজির হবে, তখন আশ্চর্য হবে।
9 এইখানে এমন মন থাকা চাই যা প্রজ্ঞাময়! সেই সাত মাথা হল সেই সাত পর্বত যার উপরে নারীটা আসীনা ;
10 সেই সাত মাথা আবার হল সাত রাজা : তাদের পাঁচজনের এরই মধ্যে পতন হয়েছে, এখনও একজন বাকি রয়েছে, অপর একজন এখনও আসেনি; যখন আসবে তখন তাকে অল্পকাল থাকতে হবে।
11 আর যে পশু ছিল, এখন আর নেই, সে নিজেও এক রাজা—একইসঙ্গে সেই অষ্টম রাজা ও সেই সাতজনের একজন ; সে কিন্তু সর্বনাশের দিকে যাচ্ছে।
12 যে দশটা শিং তুমি দেখলে, সেগুলো হল দশ রাজা; তারা এখনও রাজ্যভার নেয়নি, কিন্তু এক ঘণ্টার জন্য তারা সেই পশুর সঙ্গে রাজ-অধিকার পাবে :
13 তাদের নিজেদের পরাক্রম ও কর্তৃত্ব পশুর হাতে তুলে দেবার জন্য তারা একমত।
14 তারা মেষশাবকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, কিন্তু মেষশাবক তাদের উপর বিজয়ী হবেন, কারণ তিনি প্রভুর প্রভু ও রাজার রাজা; আর তাঁর অনুগামী যাঁরা, সেই আহূত, মনোনীত ও বিশ্বস্ত জনেরাও বিজয়ী হবেন।'
15 স্বর্গদূত বলে চললেন, “সেই যে জলরাশি তুমি দেখলে, যার উপরে বেশ্যাটা আসীনা ছিল, সেই জলরাশি হল সমস্ত জাতি, জনগোষ্ঠী, দেশ ও ভাষার মানুষের প্রতীক।
16 যে দশটা শিং তুমি দেখলে, সেগুলো বেশ্যাটাকে গুণাই করবে: তাকে বিবস্ত্রা করবে ও উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে রাখবে, পরে তার দেহমাংস খেয়ে ফেলবে ও তাকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
17 কেননা ঈশ্বর তাদের হৃদয়ে এমন প্রেরণা দিলেন, যেন তারা তাঁরই নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করে, এবং ঈশ্বরের বাণীগুলো যতদিন সিদ্ধি লাভ না করে, ততদিন তারা যেন তাদের নিজেদের রাজ্য সেই পশুর হাতে তুলে দেয়।
18 আর যে নারীকে তুমি দেখলে, সে হল সেই মহানগরী, পৃথিবীর রাজাদের উপরে যার রাজ-অধিকার আছে।'