1 প্রজ্ঞাই ঈশ্বরের বিধিনিয়ম-পুস্তক, প্রজ্ঞাই যুগযুগস্থায়ী বিধান ; যারা তাকে আঁকড়ে থাকে, তারা জীবন পাবে, যারা তাকে ত্যাগ করে, তাদের মৃত্যু হবে।
2 ফিরে এসো, যাকোব, তাকে গ্রহণ করে নাও, তার আলোর প্রভায় পথ চল
3 যা তোমার আপন গৌরব, তা অন্যকে দিয়ো না, যা তোমার আপন অধিকার, তাও পরজাতীয় মানুষকে নয়।
4 হে ইস্রায়েল, আমরাই সুখী, কারণ ঈশ্বরের যা গ্রহণীয়, তা আমাদের কাছে প্রকাশিত হল।
5 সাহস ধর, জাতি আমার, তুমি যে ইস্রায়েলের স্মরণচিহ্ন স্বরূপ!
6 সম্পূর্ণ বিনাশের উদ্দেশ্যেই যে তোমরা বিজাতীয়দের কাছে বিক্রীত হয়েছ, এমন নয়, ঈশ্বরের ক্ষোভ জাগিয়েছ বলেই তোমরা শত্রুদের হাতে সমর্পিত হয়েছ।
7 কেননা তোমরা তোমাদের নির্মাতাকে কুপিত করেছ, হ্যাঁ, তোমরা অপদূতদের উদ্দেশেই বলি উৎসর্গ করেছ, ঈশ্বরের উদ্দেশে নয় !
8 যিনি তোমাদের লালন-পালন করেছেন সেই সনাতন ঈশ্বরকে তোমরা ভুলে গেছ, তোমাদের যে পুষ্ট করেছে, সেই যেরুসালেমকেও দুঃখ দিয়েছ।
9 বস্তুত তোমাদের উপরে যখন ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে পড়ছিল, তখন তা দেখে যেরুসালেম বলে উঠল: শোন, হে সিয়োনের পার্শ্ববর্তী শহরসকল, ঈশ্বর আমার কাছে মহা শোক প্রেরণ করলেন।
10 কেননা আমি সেই বন্দিদশা দেখতে পেয়েছি, যার মধ্যে সেই সনাতন আমার ছেলেমেয়েদের চালিত করলেন।
11 আমি আনন্দের মধ্যেই তাদের লালন-পালন করেছিলাম, চোখের জল ও শোকের মধ্যেই তাদের ছাড়তে বাধ্য হলাম।
12 তোমরা কেউই আমার উপর আনন্দোল্লাস করো না, আমি যে বিধবা, আমি যে অনেকের দ্বারা পরিত্যক্তা ; আমার সন্তানদের পাপের জন্যই আমি যে স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা যে ঈশ্বরের বিধান ছেড়ে পথভ্রষ্ট হল,
13 তাঁর বিধিনিয়ম জানতে চাইল না, তাঁর আজ্ঞাগুলির পথে চলল না, শাসন-মার্গে এগিয়ে চলতেও চাইল না,—তাঁর সেই ন্যায্যতা অনুসারে।
14 এসো, হে সিয়োনের পার্শ্ববর্তী শহরসকল, স্মরণ কর সেই বন্দিদশা, যার মধ্যে সেই সনাতন আমার ছেলেমেয়েদের চালিত করলেন।
15 তাদের বিরুদ্ধে তিনি দূরদূরান্তের এক জাতিকে প্রেরণ করলেন, তারা ভিন্নভাষী এমন ধূর্ত জাতির মানুষ, যারা বৃদ্ধকেও শ্রদ্ধা দেখায়নি, শিশুকেও দয়া দেখায়নি,
16 বিধবার প্রিয় ছেলেদের কেড়ে নিল, তাকে মেয়ে-বঞ্চিতা অবস্থায় একাকিনীই ফেলে রাখল।
17 কিন্তু আমি, আমি তোমাদের কেমন সহায়তা করব?
18 যিনি তত অমঙ্গল তোমাদের উপর নামিয়ে আনলেন, তিনিই তোমাদের শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের মুক্তি সাধন করেন।
19 যাও, সন্তানেরা, যাও, আমাকে একাকিনী হয়ে থাকতে হবে।
20 শান্তি-বসন ছেড়ে মিনতি-চট পরলাম আমি ; সেই সনাতনের কাছে চিৎকার করব আমার সমস্ত দিন ধরে।
21 সাহস ধর, সন্তানেরা, ঈশ্বরের কাছে হাহাকার কর, তিনি তোমাদের শত্রুদের অত্যাচার ও কবল থেকে তোমাদের মুক্তি সাধন করবেন।
22 কেননা সেই সনাতনের কাছ থেকেই আমি তোমাদের পরিত্রাণ প্রত্যাশা করি, এবং তোমাদের সেই সনাতন ত্রাণকর্তার কাছ থেকে দয়া যে তোমাদের কাছে শীঘ্রই আসবে, এজন্য সেই পবিত্রজনের কাছ থেকে আমার অন্তরে আনন্দ এসে প্রবেশ করছে।
23 শোক ও চোখের জলের মধ্যে আমি তোমাদের চলে যেতে দেখেছি কিন্তু ঈশ্বর পুলক ও আনন্দের মধ্যেই তোমাদের আমার কাছে ফিরিয়ে দেবেন—চিরকালের মত।
24 সিয়োনের পার্শ্ববর্তী শহরগুলি যেমন এখন স্বচক্ষে দেখেছে তোমাদের বন্দিদশা, তেমনি শীঘ্রই দেখতে পাবে তোমাদের ঈশ্বরের সাধিত তোমাদের সেই পরিত্রাণ যা সেই সনাতনের মহাগৌরব ও গরিমার মধ্যেই তোমাদের কাছে আসবে।
25 সন্তানেরা, ধৈর্যের সঙ্গে সেই ক্রোধ সহ্য কর যা ঈশ্বর থেকে তোমাদের উপর এসে পড়ল। শত্রু তোমাদের উত্পীড়ন করেছে বটে, কিন্তু তোমরা শীঘ্রই দেখতে পাবে তার বিনাশ, তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেবে তোমাদের নিজেদের পা।
26 আমার প্রিয়তম সন্তানেরা ভঙ্গুর পথে হেঁটে চলল, তারা ছিল শত্রু দ্বারা তাড়িত, ছিনিয়ে নেওয়া মেষপালের মত।
27 সাহস ধর, সন্তানেরা, ঈশ্বরের কাছে হাহাকার কর ! যিনি এই সবকিছুর মধ্যে তোমাদের চালিত করলেন, তিনি তোমাদের কথা স্মরণ করবেন।
28 তোমরা যেমন ঈশ্বর থেকে দূরে যাওয়ার চিন্তা করেছিলে, তেমনি ফিরে এসে তাঁর সন্ধান করার জন্য দশগুণ বেশি আগ্রহ দেখাও।
29 কেননা যিনি এত অমঙ্গলের মধ্যে তোমাদের চালিত করেছেন, তিনি পরিত্রাণের সঙ্গে তোমাদের সনাতন আনন্দও দান করবেন।
30 সাহস ধর, যেরুসালেম ! যিনি তোমার নাম রেখেছেন, তিনি তোমাকে সান্ত্বনা দেবেন।
31 অভিশপ্ত হোক তোমার সেই অত্যাচারী সকল, যারা তোমার পতনে আনন্দ পেল ;
32 অভিশপ্ত হোক সেই শহরগুলি, যেখানে তোমার সন্তানেরা বন্দি হল, অভিশপ্ত হোক সেই শহর, যা তাদের আটকিয়ে রাখল ;
33 কেননা সে যেমন তোমার পতনের উপর আনন্দ করল, ও তোমার বিনাশের উপর উল্লাস করল, তেমনি নিজের উৎসন্ন অবস্থার উপর শোক করবে।
34 জনবহুল শহর হওয়ায় তার যে আনন্দ, তা তার কাছ থেকে কেড়ে নেব, তার পুলক শোকে পরিণত হবে।
35 সেই সনাতনের নির্দেশে তার উপর আগুন নেমে পড়বে দীর্ঘ দিন ধরে, বহুদিন ধরে সে হবে অপদূতদের বাসস্থান।
36 পুব দিকে তাকাও, যেরুসালেম ! চেয়ে দেখ সেই আনন্দ, যা স্বয়ং ঈশ্বর থেকেই তোমার কাছে আসছে !
37 দেখ, যাদের তুমি চলে যেতে দেখেছ, তোমার সেই সন্তানেরা ফিরে আসছে, পুব-পশ্চিম থেকে সম্মিলিত হয়ে তারা ফিরে আসছে, —সেই পবিত্রজনের বাণীতে— ঈশ্বরের গৌরবের উদ্দেশে তারা উল্লসিত।