1 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, সঙ্কটাপন্ন এক প্রাণ, বিপদগ্রস্ত এক আত্মা তোমার কাছে চিৎকার করছে!
2 শোন, প্রভু, এবং দয়া কর, কারণ আমরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি।
3 তুমি তো নিত্য সমাসীন, আর আমরা নিত্য মরণমুখী।
4 হে সর্বশক্তিমান প্রভু, ইয়ায়েলের ঈশ্বর, ইস্রায়েলের মৃতজনদের প্রার্থনা শোন, যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিল, তাদের সন্তানদের এই প্রার্থনা শোন; সেসময় তারা তো তাদের ঈশ্বর প্রভুর কণ্ঠস্বরে কান দেয়নি, তাই এখন এই সমস্ত অমঙ্গল আমাদের আঁকড়ে ধরে আছে।
5 আমাদের পিতৃপুরুষদের শঠতা স্মরণে রেখো না, এখন বরং স্মরণে রেখ তোমার প্রতাপ ও তোমার নাম;
6 তুমিই তো আমাদের ঈশ্বর প্রভু, আর আমরা, হে প্রভু, তোমার প্রশংসাগান করব,
7 কারণ তুমি এজন্যই আমাদের হৃদয়ে তোমার ভয় সঞ্চার করেছ, যেন আমরা তোমার নাম করতে প্রেরণা পাই। আমাদের এই নির্বাসনের দেশে আমরা তোমার প্রশংসাগান করব, কারণ আমাদের হৃদয় থেকে আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের সমস্ত শঠতা দূর করেছি যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিল।
8 দেখ, আজও আমরা নির্বাসিত ও বিক্ষিপ্ত; যারা আমাদের ঈশ্বর প্রভুকে ছেড়ে দূরে গেছিল, আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের সমস্ত শঠতার কারণে আমরা এখন বিদ্রূপ, অভিশাপ ও দণ্ডের বস্তু।
9 শোন, ইস্রায়েল, জীবনের আজ্ঞাবলি, কান পেতে শোন, যেন বুঝতে পার, সদ্বিবেচনা কী।
10 কেন, ইস্রায়েল, কেন তুমি শত্রুদেশে আছ, কেন বৃদ্ধ হচ্ছ ভিনদেশের বুকে?
11 কেন মৃতদের সঙ্গে তোমার এই কলুষ, কেনই বা তুমি তাদের মধ্যে পরিগণিত যারা পাতালে নেমে যায়?
12 কারণ তুমি তা-ই পরিত্যাগ করেছ, যা প্রজ্ঞার উৎস !
13 তুমি যদি ঈশ্বরের পথে চলতে, তবে চিরকালের মতই শান্তিতে জীবনযাপন করতে।
14 শিখে নাও সদ্বিবেচনা কোথায়, কোথায় শক্তি, কোথায় সুবুদ্ধি, যেন এও জানতে পার। কোথায় দীর্ঘায়ু ও জীবন, কোথায় চোখের আলো ও শান্তি।
15 কিন্তু কেইবা আবিষ্কার করেছে কোথায় প্রজ্ঞার আবাস? কে প্রবেশ করেছে তার গুপ্তধনাধারে ?
16 কোথায় দেশগুলির সেই নেতাসকল, তারাও কোথায়, যারা পৃথিবীর জন্তুদের উপরেও কর্তৃত্ব করত,
17 যারা আকাশের পাখিদের নিয়ে খেলা করত, যারা রাশি রাশি সোনা-রুপো সঞ্চয় করত, যাদের উপরে মানুষেরা ভরসা রাখত, যাদের ধনসম্পদের শেষ ছিল না,
18 যারা অর্থ জমিয়ে তা থেকে দুশ্চিন্তা কুড়াত , কিন্তু যাদের কর্মের চিহ্নমাত্রই রইল না?
19 তারা মিলিয়ে গেছে, পাতালে নেমে গেছে, আর অন্যেরা তাদের পদ দখল করেছে।
20 নতুন প্রজন্মের মানুষ দিনের আলো দেখতে পেয়েছে, তারাই এসে এখন দেশে বসবাস করছে, অথচ খুঁজে পায়নি সজ্ঞানের পথ,
21 তার সমস্ত মার্গেও মনোযোগ দেয়নি, তার বিষয় চিন্তাও করেনি, এমনকি, ছেলেরা এড়িয়েছে তাদের পিতাদের পথ।
22 কানান দেশে প্রজ্ঞার কথা কখনও শোনা যায়নি, তেমানেও কেউ তার দর্শন পায়নি;
23 মর্ত-সুবুদ্ধির অন্নেবী সেই আগারের সন্তানেরা, মিদিয়ান ও তেমানের বণিক সকল, যারা শুধু গল্প বর্ণনা করে, যারা সুবুদ্ধির সন্ধান করে, তারা কেউই পায়নি প্রজ্ঞার পথ, স্মরণও করেনি তার মার্গ সকল।
24 ইস্রায়েল, ঈশ্বরের গৃহ কেমন বিস্তৃত, তাঁর কর্তৃত্বের স্থান কেমন প্রশস্ত !
25 তার বিস্তার সীমাহীন, তার উচ্চতা অপরিমেয় !
26 সেইখানে পুরাকাল থেকে বিখ্যাত সেই মহাবীরদের জন্মস্থান, যারা ছিল লম্বা লম্বা মানুষ, যুদ্ধে নিপুণ ;
27 ঈশ্বর এদের বেছে নিলেন না, সজ্ঞানের পথও এদের দিলেন না :
28 সদ্বিবেচনা অভাবের ফলে তাদের বিলোপ হল, নির্বুদ্ধিতার ফলে তাদের বিলোপ হল।
29 কেইবা স্বর্গে আরোহণ করে প্রজ্ঞাকে কেড়ে নিল ও মেঘলোক থেকে তাকে নামিয়ে আনল ?
30 কে সাগর পার হয়ে তার সন্ধান পেল ও খাটি সোনার বিনিময়ে তাকে নিয়ে নিল ?
31 না, কেউ জানতে পারে না তার কাছে যাওয়ার রাস্তা, কেউই বুঝতে পারে না তার যাতায়াতের পথ।
32 কিন্তু সর্বজ্ঞ যিনি, তাকে জানেন যিনি, নিজের সুবুদ্ধি দ্বারা তাকে তলিয়ে দেখলেন যিনি, চিরকালের জন্য যিনি পৃথিবী প্রস্তুত করলেন, ও চতুষ্পদ জীবজন্তুতে তা পরিপূর্ণ করলেন ;
33 যিনি আলো প্রেরণ করলেই আলো এগিয়ে যায়, তা ফিরিয়ে ডাকলেই আলো সকম্পে বাধ্য হয়,
34 — নিজ নিজ প্রহরা স্থান থেকে হয় তারানক্ষত্রের উদ্ভাস, সবগুলিই আনন্দিত—
35 যিনি ডাকলে তারা উত্তর দেয় : 'এই যে আমরা!” সেই যে নির্মাতার জন্য তারা সানন্দে উদ্ভাসিত,
36 তিনিই আমাদের ঈশ্বর, তাঁর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না ;
37 তিনিই সজ্ঞানের সমস্ত পথ অনাবৃত করলেন, ও তাঁর আপন দাস যাকোবকে, তাঁর প্রীতিভাজন সেই ইস্রায়েলকে তা প্রদান করলেন।
38 এরপর পৃথিবীতে দৃশ্যমান হল, ও মানুষদের মাঝে জীবন কাটাল।