1 সুতরাং, হে মানুষ, তুমি যেই হও না কেন, যদি বিচার কর, তাহলে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলার মত তোমার আর কিছু নেই; কারণ পরের বিচার করে তুমি নিজেকেই দোষী করে থাক। কেননা যাদের বিচার করছ, তুমি তাদেরই মত সেইসব করে থাক।
2 অথচ আমরা জানি, যারা তেমন কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বিচার সত্যসম্মত।
3 হে মানুষ, যারা তেমন কাজ করে, তুমি যখন তাদের বিচার করে থাক ও সেইসঙ্গে নিজেও তেমন কাজ করে থাক, তখন তুমি কি ভাবছ, তুমি ঈশ্বরের বিচার এড়াবে?
4 না কি তাঁর মহা মঙ্গলময়তা, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা তুচ্ছ করে তুমি বুঝে উঠতে পার না যে, ঈশ্বরের মঙ্গলময়তা তোমাকে মনপরিবর্তনের দিকেই নিয়ে যেতে চায়?
5 কিন্তু তোমার জেদ ও মনপরিবর্তন-বিহীন হৃদয়কে প্রশ্রয় দিয়ে তুমি ক্রোধের দিনের জন্য, ঈশ্বরের ন্যায়বিচার প্রকাশেরই সেই দিনের জন্য নিজের উপরে ক্রোধ জমিয়ে তুলছে।
6 তিনি তো প্রত্যেক মানুষকে তার কর্ম অনুযায়ী প্রতিফল দেবেন :
7 যারা সৎকর্ম সাধনে নিষ্ঠাবান হয়ে গৌরব, সম্মান ও অক্ষয়শীলতার অন্বেষণ করে, তাদের জন্য থাকবে অনন্ত জীবন;
8 কিন্তু যারা ঈর্ষাভরে সত্যের প্রতি অবাধ্য ও অধর্মের প্রতি বাধ্য, তাদের উপরে ক্রোধ ও রোষ নেমে আসবে।
9 প্রথমে ইহুদী, তারপরে গ্রীক — যে কেউ অপকর্ম করে, তেমন মানুষের উপরে ক্লেশ ও মর্মযন্ত্রণা নেমে আসবে।
10 কিন্তু প্রথমে ইহুদী, তারপরে গ্রীক—যে কেউ সৎকর্ম করে, তার উপর নেমে আসবে গৌরব, সম্মান ও শান্তি।
11 কেননা ঈশ্বরের কাছে পক্ষপাত নেই।
12 যত মানুষ বিধানবিহীন অবস্থায় পাপ করেছে, বিধানবিহীন অবস্থায় তাদের বিনাশ হবে; আর বিধানের অধীনে থেকে যত মানুষ পাপ করেছে, বিধান দ্বারাই তাদের বিচার করা হবে।
13 কারণ যারা বিধান কানে শোনে, তারা যে ঈশ্বরের কাছে ধর্মময় এমন নয়; যারা বিধান পালন করে, তাদেরই ধর্মময় বলে সাব্যস্ত করা হবে।
14 তাই যে বিজাতীয়রা কোন বিধান পায়নি, তারা যখন সহজাত বিচারবোধ দ্বারা বিধান অনুসারে আচরণ করে, তখন বিধান না পাওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেরাই নিজেদের বিধান হয়ে ওঠে।
15 তারা দেখায় যে, বিধান যা যা দাবি করে, তা তাদের হৃদয়ে খোদাই করে লেখা আছে ; তাদের বিবেকও একই বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়, এবং একই প্রকারে তাদের নিজেদের চিন্তা-ধারণাই হয় তাদের বিপক্ষে দাঁড়ায়, না হয় তাদের পক্ষ সমর্থন করে।
16 তেমনি ঘটবে সেই দিনে, যেদিন ঈশ্বর— আমার সুসমাচারের কথা অনুসারে যিশুখ্রিষ্ট দ্বারা মানুষের গোপন সবকিছু বিচার করবেন।
17 আচ্ছা, তুমি যদি নিজেকে ইহুদী বলে অভিহিত কর, বিধানের উপর ভরসা রাখ, ঈশ্বরে গর্ব করে থাক,
18 ও বিধানের শিক্ষায় শিক্ষাপ্রাপ্ত হওয়ায় তাঁর ইচ্ছা জান ও যা কিছু শ্রেয় তা নির্ণয় করতে পার,
19 এবং নিশ্চিত আছ যে, তুমিই অন্ধদের পথপ্রদর্শক, ও যারা অন্ধকারে বসে আছে তুমিই তাদের আলো,
20 তুমিই বুদ্ধিহীনদের গুরু ও সরলদের শিক্ষক কারণ বিধানে তুমি জ্ঞান ও সত্যের মূর্ত পরিচয় পেয়েছ,
21 তাহলে তুমি যে পরকে শিক্ষা দিচ্ছ, কেনই বা নিজেকে শিক্ষা দাও না? তুমি যে প্রচার করছ, চুরি করতে নেই, তুমি কি চুরি কর?
22 তুমি যে বলছ, ব্যভিচার করা নিষেধ, তুমি কি ব্যভিচার কর? তুমি যে প্রতিমাগুলো জঘন্যই মনে করছ, তুমি কি দেবালয়ের সবকিছু লুট কর?
23 তুমি যে বিধানে গর্ব করছ, তুমি কি বিধান লঙ্ঘন করে ঈশ্বরকে উপেক্ষা কর?
24 বাস্তবিকই যেমনটি লেখা আছে, তোমাদের কারণেই ঈশ্বরের নাম জাতিগুলির মধ্যে নিন্দার বস্তু হচ্ছে!
25 পরিচ্ছেদন তো ভাল জিনিস বটে—যদি তুমি বিধান পালন কর! কিন্তু তুমি যদি বিধান লঙ্ঘন কর, তবে তোমার পরিচ্ছেদন নিয়ে তুমি অপরিচ্ছেদিতেরই মত।
26 সুতরাং অপরিচ্ছেদিত একটি মানুষ যদি বিধানের বিধিনিয়ম পালন করে, তাহলে তার সেই অপরিচ্ছেদিত অবস্থায়ও সে কি পরিচ্ছেদিত মানুষ বলে পরিগণিত হবে না?
27 এমনকি, দৈহিক ভাবে অপরিচ্ছেদিত হয়েও যে কেউ বিধান পালন করে, সে-ই তোমার বিচার করবে—তুমি যে বিধানের অক্ষর ও পরিচ্ছেদন নিয়ে ব্যস্ত থাকা সত্ত্বেও বিধান লঙ্ঘন করছ।
28 কেননা বাইরে দেখতে যে ইহুদী, সে-ই যে ইহুদী এমন নয়, এবং বাইরে দেখতে দেহেই যে পরিচ্ছেদন, সেটাই যে পরিচ্ছেদন এমন নয়।
29 সে-ই বরং ইহুদী, অন্তরে যে ইহুদী; এবং সেটাই পরিচ্ছেদন, হৃদয়ের যে পরিচ্ছেদন – যা অক্ষরের নয়, আত্মারই ব্যাপার! তার প্রশংসা মানুষ থেকে নয়, ঈশ্বর থেকেই আসে।