1 আমি পল, খ্রিস্টযিশুর দাস, প্রেরিতদূত হতে আহূত। আমাকে ঈশ্বরের সুসমাচারের উদ্দেশে স্বতন্ত্র করে রাখা হয়েছে,
2 যে সুসমাচার দেবেন বলে ঈশ্বর পবিত্র শাস্ত্রবাণীতে তাঁর নবীদের মধ্য দিয়ে আগে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন।
3 এই সুসমাচার তাঁর আপন পুত্রেরই বিষয়ে, যিনি মাংস অনুসারে দাউদ-বংশে সঞ্জাত,
4 পবিত্রতার আত্মা অনুসারে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানের মধ্য দিয়ে সপরাক্রমেই ঈশ্বরের পুত্র বলে নিযুক্ত, — তিনি আমাদের প্রভু সেই যিশুখ্রিষ্ট,
5 যাঁর দ্বারা আমরা, তাঁর নামের উদ্দেশে, প্রেরিতদূত হবার অনুগ্রহ পেয়েছি, যেন সকল জাতিকে বিশ্বাসের বাধ্যতার কাছে চালিত করি;
6 তাদের মধ্যে তোমরাও আছ, যারা যিশুখ্রিষ্টেরই হবার জন্য আহূত।
7 রোমে ঈশ্বরের প্রিয়জন যারা, পবিত্রজন হতে আহূত যারা, তোমাদের সকলের সমীপে : আমাদের পিতা ঈশ্বর ও প্রভু যিশুখ্রিষ্ট থেকে অনুগ্রহ ও শান্তি তোমাদের উপর বর্ষিত হোক।
8 প্রথমে আমি তোমাদের সকলের জন্য যিশুখ্রিস্ট দ্বারা আমার ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কারণ তোমাদের বিশ্বাসের কথা সমগ্র জগতে ছড়িয়ে পড়ছে।
9 তাঁর পুত্রের সুসমাচার প্রচার করে আমি নিজের আত্মায় যাঁর আরাধনা করে থাকি, সেই ঈশ্বর নিজেই আমার সাক্ষী যে, আমার প্রার্থনাকালে আমি তোমাদের কথা নিরন্তর স্মরণে রাখি,
10 সবসময় যাচনা করে থাকি যেন ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমি কোন প্রকারে তোমাদের কাছে যেতে অবশেষে সুযোগ পেতে পারি।
11 কেননা তোমাদের দেখতে আমি বড়ই আকাঙ্ক্ষী, যাতে এমন আত্মিক অনুগ্রহদান তোমাদের প্রদান করতে পারি যেন তোমরা সুস্থির হয়ে উঠতে পার;
12 এমনকি, তোমাদের ও আমার যে পারস্পরিক বিশ্বাস আছে, তা দ্বারা তোমাদের মধ্যে আমি নিজেও যেন তোমাদের সঙ্গে দৃঢ়মূল হয়ে উঠতে পারি।
13 ভাই, আমি চাই না, একথা তোমাদের অজানা থাকবে যে, যদিও এতক্ষণে বাধা পেয়েছি, তবু আমি তোমাদের কাছে আসবার জন্য বারবার সঙ্কল্প নিয়েছি, বিজাতীয় অন্য সকল মানুষের মধ্যে যেমন ফল পেয়েছি, তেমনি তোমাদের মধ্যেও যেন কোন ফল পেতে পারি।
14 হ্যাঁ, আমি গ্রীক ও ভিনভাষীদের কাছে, শিক্ষিত ও অশিক্ষিতদের কাছে — সকলেরই কাছে আমি ঋণী ;
15 সেইজন্য আমার পক্ষ থেকে আমি রোম-নিবাসী তোমাদেরও কাছে সুসমাচার প্রচার করতে আগ্রহী।
16 কেননা সুসমাচার নিয়ে আমি লজ্জা বোধ করি না, কারণ প্রথমে ইহুদী এবং তারপরে গ্রীক—যে কেউ বিশ্বাস করে, তার পরিত্রাণের জন্য এ সুসমাচার হল স্বয়ং ঈশ্বরের পরাক্রম,
17 কারণ সুসমাচারেই প্রকাশিত আছে ঈশ্বরের ধর্মময়তা যা বিশ্বাসমূলক ও বিশ্বাসজনক, যেমনটি লেখা আছে। বিশ্বাসগুণে যে ধার্মিক, সে বাঁচবে।
18 বাস্তবিকই, যারা অধর্মের মধ্যে সত্যকে প্রতিরোধ করে, ঈশ্বরের ক্রোধ স্বর্গ থেকে সেই মানুষদের অভক্তি ও অধর্মের উপরে প্রকাশিত হচ্ছে,
19 কারণ ঈশ্বরের বিষয়ে যা জানা যেতে পারে, তা তাদের কাছে প্রকাশ্য, যেহেতু ঈশ্বর নিজে তাদের কাছে তা প্রকাশ করেছেন :
20 তাঁর অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁর সনাতন পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিলগ্ন থেকে বোধশক্তির মধ্য দিয়ে তাঁর নানাবিধ সৃষ্টিকর্মে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে; ফলে আত্মপক্ষ সমর্থনে বলার মত সেই মানুষদের কিছু নেই,
21 কারণ ঈশ্বরকে জেনেও তারা তাঁকে ঈশ্বর বলে গৌরব আরোপ করেনি, ধন্যবাদও জানায়নি; বরং তাদের ধ্যানধারণা অসার হয়ে গেছে, তাদের অবোধ মনও অন্ধকারময় হয়ে গেছে।
22 নিজেদের প্রজ্ঞাবান বলতে বলতে তারা মূর্খ হয়েছে,
23 এবং অক্ষয়শীল ঈশ্বরের গৌরবকে ক্ষয়শীল মানুষের, পাখি, চতুষ্পদের ও সরিসৃপের সাদৃশ্যে পড়া প্রতিমূর্তির সঙ্গে বিনিময় করেছে।
24 এজন্য ঈশ্বর তাদের নিজেদের মনের নানা অভিলাষ অনুসারে এমন অশুচিতার হাতে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন যে, তারা নিজেরাই নিজেদের দেহের অসম্মান ঘটায়,
25 কারণ তারা ঈশ্বরের সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে বিনিময় করেছে, এবং সৃষ্টবস্তুকেই পূজা ও আরাধনা করেছে—সেই সৃষ্টিকর্তাকে নয়, যিনি যুগে যুগে ধন্য। আমেন।
26 তাই ঈশ্বর জঘন্য রিপুর হাতে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন তাদের স্ত্রীলোকেরা প্রাকৃতিক যৌন সম্পর্ককে প্রকৃতি-বিরুদ্ধ সম্পর্কের সঙ্গে বিনিময় করেছে;
27 তেমনিভাবে পুরুষেরাও প্রাকৃতিক নারী-সম্পর্ক ত্যাগ করে একে অপরের কামনায় জ্বলে পুড়েছে— পুরুষে পুরুষে তারা কুৎসিত কর্ম সাধন করেছে, ফলে নিজেরাই নিজেদের ভ্রান্তির যোগ্য প্রতিফল পেয়েছে।
28 আর যেহেতু তারা নিজেদের জ্ঞান দ্বারা ঈশ্বরকে স্বীকার করতে সম্মত হয়নি, সেজন্য ঈশ্বর স্রষ্ট মনের হাতেই তাদের ছেড়ে দিয়েছেন; ফলে যা অনুচিত, তারা তা-ই করে থাকে।
29 তারা সব রকম অধর্ম, দুষ্টতা, লোলুপতা ও শঠতায় পরিপূর্ণ; হিংসা, নরহত্যা, বিবাদ, ছলনা ও অনিষ্ট কামনায় ভরা; তারা পরনিন্দুক,
30 পরচর্চা-প্রিয়, ঈশ্বরের শত্রু, উদ্ধত, অহঙ্কারী, দাম্ভিক, অপকর্মে মেধাবী,
31 পিতামাতার অবাধ্য, নির্বোধ, অবিশ্বস্ত, হৃদয়হীন, মমতাহীন।
32 তারা ঈশ্বরের সেই বিচার জানেই বটে, যা অনুসারে যারা তেমন কাজ করে তারা মৃত্যুর যোগ্য, কিন্তু তবু তারা সেইসব করতে থাকে; আর শুধু তা নয়, যারা সেইসব করে, তাদের সমর্থনও তারা করে।