1 সালেম-রাজ ও পরাৎপর ঈশ্বরের যাজক এই মেল্কিসেদেক, যিনি, আব্রাহাম যখন রাজাদের সংহার করার পর ফিরে আসছিলেন, তখন পথে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এগিয়ে এলেন ও তাঁকে আশীর্বাদ করলেন,
2 এবং যাঁকে আব্রাহাম সবকিছুর দশমাংশ দিলেন, – যিনি, তাঁর নামের অর্থ অনুবাদ করলে, প্রথমে 'ধর্মরাজ', এবং পরে সালেম-রাজ অর্থাৎ 'শান্তিরাজ' বলে অভিহিত,
3 যাঁর পিতা নেই, মাতা নেই, বংশতালিকাও নেই, যেহেতু তাঁর জীবনের আরম্ভও নেই, জীবনের অন্তও নেই, কিন্তু ঈশ্বরের পুত্রের সাদৃশ্যে উন্নীত হলেন, সেজন্য সর্বকালের মত যাজক হয়ে থাকেন।
4 বিবেচনা করে দেখ তিনি কেমন মহান, যাঁকে কুলপতি আব্রাহামও লুটের মালের দশমাংশ দিয়েছিলেন।
5 লেবি-সন্তানদের মধ্যে যারা যাজকত্ব বরণ করে, তারাও বিধান অনুসারে জনগণের কাছ থেকে, অর্থাৎ নিজেদের ভাইদের কাছ থেকে দশমাংশ আদায় করার আদেশ পেয়েছে, যদিও তাদের সেই ভাইয়েরাও আব্রাহামের বংশধর।
6 অথচ তাদের বংশের মানুষ না হয়েও ইনি আব্রাহামের কাছ থেকে দশমাংশ গ্রহণ করেছিলেন, এবং তাঁকেই আশীর্বাদ করেছিলেন, যিনি প্রতিশ্রুতিগুলির বাহক।
7 এখন, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, যে বড়, সে-ই ছোটজনকে আশীর্বাদ করে থাকে।
8 আরও, এখানে, যারা দশমাংশ পায়, তারা মরণশীল মানুষ, কিন্তু সেখানে, আমাদের এমন একজন আছেন, যাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়া আছে যে, তিনি জীবিত আছেন।
9 এমনকি, বলতে গেলে, সেই লেবি— যিনি দশমাংশ পান—তিনিও আব্রাহামের মধ্য দিয়ে নিজের দশমাংশ দিয়েছেন,
10 কারণ যখন মেল্কিসেদেক তাঁর পিতৃপুরুষের সঙ্গে দেখা করতে এগিয়ে এলেন, লেবি তখনও পিতৃপুরুষের দেহে একপ্রকারে উপস্থিত ছিলেন।
11 সুতরাং সিদ্ধীকরণ যদি লেবীয় যাজকত্বের মধ্য দিয়েই হত—সেই যাজকত্বের অধীনেই তো জনগণ বিধান পেয়েছিল—তবে আবার কি প্রয়োজন ছিল যে, মেল্কিসেদেকের রীতির ভিন্ন ধরনের এক যাজকের উদ্ভব হবে ও তাঁকে আরোনেরই রীতি অনুসারে যাজক বলে অভিহিত করা হবে না?
12 আসলে যদি যাজকত্বের পরিবর্তন ঘটে, তবে বিধানেরও পরিবর্তন ঘটে, ব্যাপারটা আবশ্যক।
13 এখন, যাঁর বিষয়ে এই সমস্ত কথা বলা হয়, তিনি তো অন্য গোষ্ঠীর মানুষ, আর সেই গোষ্ঠীর মধ্যে কেউই কখনও যজ্ঞবেদিতে সেবাকর্ম পালন করেনি।
14 আর আমাদের প্রভু যে যুদার মধ্য থেকেই উদ্গত, তা জানা কথা; মোশীও সেই গোষ্ঠীকে লক্ষ করে যাজকত্বের বিষয়ে কিছুই বলেননি।
15 ব্যাপারটা আরও সুস্পষ্ট হয়ে দাঁড়ায় যদি মেল্কিসেদেকেরই সাদৃশ্য অনুসারে আর এক যাজকের উদ্ভব হয়,
16 যিনি দেহগত জন্ম ভিত্তিক কোন বিধি-নিয়ম গুণে নয়, অবিনশ্বর জীবনের পরাক্রম গুণেই যাজক ;
17 প্রকৃতপক্ষে তাঁর বিষয়ে এই সাক্ষ্য রয়েছে: তুমি মেল্কিসেদেকের রীতি অনুসারে চিরকালের মত যাজক।
18 তাহলে এক দিকে আগেকার বিধি দুর্বল ও অক্ষম হওয়ায় বাতিল করা হচ্ছে—
19 বিধান তো কিছুরই সিদ্ধতা সাধন করেনি! — অপর দিকে শ্রেয়তর এমন এক প্রত্যাশা অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে আমরা ঈশ্বরের কাছে এগিয়ে যাই।
20 উপরন্তু, তেমন কিছু বিনা শপথে ঘটেনি। তারাই তো বিনা শপথে যাজক হচ্ছিল,
21 কিন্তু ইনি শপথের সঙ্গে তাঁরই দ্বারা নিযুক্ত, যিনি তাঁকে বললেন, প্রভু শপথ করেছেন আর তার অন্যথা করবেন না— তুমি চিরকালের মত যাজক।
22 এজন্য খ্রিষ্ট শ্রেয়তর এক সন্ধির নিশ্চয়তা স্বরূপ হলেন।
23 তাছাড়া তারা সংখ্যায় অনেক যাজক হচ্ছিল, কারণ মৃত্যু তাদের বেশি দিন থাকতে দিচ্ছিল না।
24 কিন্তু তিনি 'চিরকালের মত' থাকেন বিধায় তাঁর যাজকত্ব হরণযোগ্য নয়।
25 এজন্য যারা তাঁরই মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের কাছে এগিয়ে যায়, তিনি সম্পূর্ণরূপেই তাদের ত্রাণ করতে সক্ষম; কেননা তাদের হয়ে আবেদন জানাবার জন্য তিনি নিত্যই জীবিত আছেন।
26 সত্যি, তেমনই এক মহাযাজক আমাদের পক্ষে উপযুক্ত ছিলেন, যিনি পুণ্যবান, নির্দোষ, নিষ্কলঙ্ক, পাপী মানুষের কাছ থেকে পৃথক, স্বর্গের ঊর্ধ্বেই উন্নীত।
27 অন্যান্য মহাযাজকদের মত প্রতিদিন তাঁর পক্ষে এমন প্রয়োজন নেই। যে, আগে নিজের এবং তারপরে জনগণের পাপের জন্য বলি উৎসর্গ করবেন, কেননা নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়ে তিনি সেই কাজ একবার চিরকালের মতই সম্পন্ন করলেন।
28 বিধান যজন-পদে তেমন মানুষ নিযুক্ত করে যারা দুর্বলতাগ্রস্ত; অপরদিকে বিধানের পরে উচ্চারিত সেই শপথের বাণী একজনকে নিযুক্ত করে যিনি পুত্র, যাঁকে 'চিরকালের মত' নিজ সিদ্ধতায় চালনা করা হয়েছে।