1 স্বামীর দিক থেকে এলিমেলেকের গোত্রে নয়েমির একজন জ্ঞাতি ছিলেন, তিনি যথেষ্ট অবস্থাপন্ন লোক, তাঁর নাম বোয়াজ।
2 মোয়াবীয়া রুথ নয়েমিকে বললেন, “আমাকে মাঠে যেতে দাও; যে মাঠে ফসল তোলা হচ্ছে, সেখানে গিয়ে আমি মাটিতে পড়া শিষগুলো এমন একজনের পিছু পিছু কুড়োই, যার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাই।' নয়েমি বললেন, 'মেয়ে আমার যাও।'
3 তিনি গিয়ে মাঠে শস্যকাটিয়েদের পিছু পিছু মাটিতে পড়া শিষ কুড়োতে লাগলেন; দৈবাৎ তিনি এলিমেলেকের গোত্রের ওই বোয়াজের জমিতেই গিয়ে পড়লেন।
4 আর দেখ, বোয়াজ বেথলেহেম থেকে এসে কাটিয়েদের বললেন, 'প্রভু তোমাদের সঙ্গে থাকুন।' তারা উত্তরে বলল, “প্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করুন।
5 কাটিয়েদের উপরে তাঁর যে কর্মচারী নিযুক্ত ছিল, তাকে বোয়াজ জিজ্ঞাসা করলেন, 'এ যুবতী মেয়ে কার্?
6 কাটিয়েদের উপরে নিযুক্ত কর্মচারী উত্তরে বলল, ‘এ সেই মোয়াবীয়া যুবতী, যে নয়েমির সঙ্গে মোয়াবের সমতল ভূমি থেকে এসেছিল ;
7 সে বলল: দয়া করে আমাকে কাটিয়েদের পিছু পিছু আর্টিগুলোর মধ্যে মাটিতে পড়া শিষ কুড়িয়ে সংগ্রহ করতে দাও। তাই সে এসে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত এখানে রয়েছে : ঘর নয়, এ-ই তো তার বাসস্থান !
8 তখন বোয়াজ রুথকে বললেন, “মেয়ে আমার, একটু শোন; কুড়োতে তুমি অন্য মাঠে যেয়ো না ; এখান থেকে চলে যেয়োও না; এখানে আমার যুবতী দাসীদের সঙ্গে সঙ্গে থাক।
9 কাটিয়েরা যে মাঠের ফসল কাটবে, সেদিকে নজর রেখে তুমি দাসীদের পিছনে যাও; আমি কি আমার যুবকদের তোমাকে বিরক্ত করতে নিষেধ করিনি? আর তোমার তেষ্টা পেলে তুমি পারের ধারে গিয়ে, যুবকেরা যে জল তুলেছে, তা থেকে খাও।'
10 তখন রুদ্ধ উপুড় হয়ে ভূমিতে প্রণিপাত করলেন; তাঁকে বললেন, 'আমি কেন আপনার দৃষ্টিতে এমন অনুগ্রহের পাত্র হয়েছি যে, বিদেশিনী এই আমার প্রতি আপনি মুখ তুলে চাইলেন?'
11 বোয়াজ উত্তরে বললেন, 'আমাকে বলা হয়েছে, তোমার স্বামীর মৃত্যুর পরে তুমি তোমার শাশুড়ীর প্রতি কেমন ব্যবহার করেছ; এও শুনেছি যে, তোমার পিতামাতা ও জন্মভূমি ছেড়ে তুমি আগে যাদের জানতে না, এমন লোকদেরই কাছে এসেছ।
12 প্রভু তোমার তেমন ব্যবহারের যোগ্য মজুরি দিন; ইস্রায়েলের পরমেশ্বর যে প্রভুর ডানার নিচে তুমি আশ্রয় নিয়েছ, তিনি তোমাকে পুরো মজুরি দিন।
13 রুথ বললেন, 'প্রভু আমার, আমি যেন আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহের পাত্র হতে পারি! আমি আপনার একটা দাসীর সমান না হলেও আপনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন, আপনার এই দাসীর হৃদয় জুড়িয়ে দিয়েছেন!'
14 খাওয়া-দাওয়ার সময়ে বোয়াজ তাঁকে বললেন, 'এখানে এসে রুটি খাও, তোমার রুটির টুকরোটা সির্কায় ভিজিয়ে নাও।' তাই তিনি কাটিয়েদের পাশে পাশে বসলেন, আর বোয়াজ তাঁকে ভাজা গম দিলেন ; রুথ তৃপ্তির সঙ্গে খেলেন, আর বাকি কিছুটা বাঁচিয়ে রাখলেন।
15 পরে তিনি উঠে যখন কুড়োতে যাচ্ছিলেন, তখন বোয়াজ তাঁর কর্মচারীদের আজ্ঞা দিলেন ওকে আটিগুলোর মধ্যেও কুড়োতে দাও, ওকে বিরক্ত করবে না।
16 এমনকি, ওর জন্য বাঁধা আটি থেকে ইচ্ছা করেই কিছুটা শিষ মাটিতে পড়তে দাও; সেগুলো রেখে যাও, ও যেন তা কুড়োতে পারে ; ওকে ধমক দেবে না!”
17 তাই রুথ সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই মাঠে কুড়োলেন; পরে তিনি কুড়িয়ে নেওয়া শিষগুলো মাড়াই করালে তাতে প্রায় এক মণ যব হল।
18 তা তুলে নিয়ে তিনি শহরে ফিরে গেলেন, এবং শাশুড়ী তাঁর কুড়িয়ে নেওয়া শিষগুলো দেখলেন। পরে রুদ্ধ যে খাবারটুকু বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, তা বের করে তাঁকে দিলেন।
19 শাশুড়ী তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি আজ কোথায় কুড়িয়েছ? কোথায় কাজ করেছ? যিনি তোমার দিকে মুখ তুলে চাইলেন, তিনি ধন্য হোন!' তখন রুখ কার্ মাঠে কাজ করেছিলেন, তা শাশুড়ীকে জানিয়ে দিলেন; বললেন, 'যার কাছে আজ কাজ করেছি, তাঁর নাম বোয়াজ।'
20 নয়েমি পুত্রবধূকে বললেন, 'তিনি প্রভুর আশীর্বাদের পাত্র হোন! তিনি জীবিত ও মৃতদের প্রতি সহৃদয়তা দেখাতে ক্ষান্ত হননি।” নয়েমি বলে চললেন, 'এই লোকের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ জ্ঞাতি সম্পর্ক আছে; মূল্য দিয়ে আমাদের মুক্তিসাধনের অধিকার যাঁদের আছে, সেই জ্ঞাতিদের মধ্যে তিনি একজন।”
21 মোয়াবীয়া রুথ বললেন, 'তিনি আমাকে একথাও বললেন, আমার সমস্ত ফসল-কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমার কর্মচারীদের সঙ্গে সঙ্গে থাক।'
22 তখন নয়েমি পুত্রবধূ রুথকে বললেন, 'মেয়ে আমার, ভাল কথাই যে তুমি তাঁর দাসীদের সঙ্গে যাবে, এবং অন্য কোন মাঠে তোমাকে দুর্ব্যবহার সহ্য করতে যেতে হবে না।'
23 তাই যব ও গম কাটা শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি কুড়োবার জন্য বোয়াজের দাসীদের সঙ্গে সঙ্গে থাকলেন; পরে শাশুড়ীর সঙ্গে বসবাস করলেন।