1 ঈশ্বরের ও প্রভু যিশুখ্রিষ্টের দাস আমি, যাকোব, বিদেশে ছড়িয়ে পড়া বারোটি গোষ্ঠীর কাছে প্রীতি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
2 হে আমার ভাই, তোমরা যখন নানা ধরনের পরীক্ষার সম্মুখীন হও, তখন তা পরম আনন্দের বিষয় মনে কর,
3 একথা জেনে যে, তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা হল নিষ্ঠার উৎস।
4 তবে নিষ্ঠা নিজের কাজে সিদ্ধি লাভ করুক, যেন তোমরা এমন সিদ্ধ ও পূর্ণ-পরিণত মানুষ হয়ে উঠতে পার, যাদের কোন কিছুর অভাব থাকে না।
5 তোমাদের কারও যদি প্রজ্ঞার অভাব থাকে, তবে সে সেই ঈশ্বরের কাছে যাচনা করুক, যিনি সকলকে উদারভাবে ও তিরস্কার না করেই দান করেন; আর তাকে তা দেওয়া হবে।
6 কিন্তু যাচনাটা বিশ্বাসেরই সঙ্গে করা চাই, সন্দেহের লেশমাত্রও যেন না থাকে; কেননা যে সন্দেহ করে, সে সমুদ্রের সেই ঢেউয়ের মত যা বাতাসে তাড়িত ও আলোড়িত।
7 তেমন মানুষ যেন প্রভুর কাছ থেকে কিছু পাবার প্রত্যাশা না করে ;
8 সে তো দোমনা, তার সমস্ত আচরণে সে অস্থির।
9 যে ভাই নিম্নাবস্থার মানুষ, তাকে যে উন্নীত করা হয়েছে, সে তাতে গর্ববোধ করুক;
10 আর যে ধনী, তাকে যে অবনত করা হয়েছে, সে তাতে গর্ববোধ করুক ; কেননা সে ঘাসফুলেরই মত মিলিয়ে যাবে।
11 তেজময় হয়ে সূর্য ওঠে ও ঘাস শুকিয়ে যায়, তাতে তার ফুল ঝরে পড়ে আর তার রূপের সৌন্দর্য বিলীন হয়; তেমনি ধনীও তার সমস্ত কাজকর্মে ম্লান হয়ে পড়বে।
12 সুখী সেই মানুষ, পরীক্ষার দিনে যে নিষ্ঠাবান থাকে; কারণ নিজের যোগ্যতা দেখানোর পর সে সেই জীবনমুকুট পাবে যা তাদেরই কাছে প্রতিশ্রুত যারা তাঁকে ভালবাসে।
13 পরীক্ষার সময়ে কেউ যেন না বলে, 'ঈশ্বর আমাকে প্রলোভন দেখাচ্ছেন' কেননা যা মন্দ, তেমন প্রলোভনের দিকে ঈশ্বরের কোন আকর্ষণ থাকতে পারে না, আর তিনি কাউকে পরীক্ষার সম্মুখীন করেন না ;
14 বরং প্রতিটি মানুষ নিজ নিজ কামনা-বাসনায় আকৰ্ষিত ও প্রবঞ্চিত হওয়ার ফলেই পরীক্ষার সম্মুখীন হয় ;
15 এরপর কামনা-বাসনা গর্ভস্থ হয়ে পাপ প্রসব করে, এবং পাপ, একবার সাধিত হলে, মৃত্যুকে জন্মায়।
16 হে আমার প্রিয় ভাই, তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ো না।
17 উত্তম যত উপহার এবং নিখুঁত যত দান ঊর্ধ্বলোক থেকে আসে, জ্যোতির্মণ্ডলের সেই পিতা থেকেই নেমে আসে, যাঁর মধ্যে কোন রূপান্তর নেই, পরিবর্তনের ছায়াও নেই।
18 নিজের ইচ্ছায় তিনি বাণী দ্বারা আমাদের জন্ম দিয়েছেন, যেন আমরা তাঁর সমস্ত সৃষ্টবস্তুর এক প্রকার প্রথমফসল হতে পারি।
19 হে আমার প্রিয় ভাই, তোমরা তো একথা জান : শুনতে সবাই তৎপর থাকুক, কথা বলতে কিন্তু সবাই যেন ধীর হয়, ক্রোধে ধীর হয়,
20 কেননা মানুষের ক্রোধের ফলে ঈশ্বরের ধর্মময়তা অনুযায়ী কোন কাজ হতে পারে না।
21 তাই তোমাদের মধ্যে যা কিছু অশুচিতা ও শঠতা এখনও থাকতে পারে, তা বর্জন করে তোমাদের অন্তরে সেই রোপিত বাণীকে সাদরে গ্রহণ কর, যা তোমাদের প্রাণের পরিত্রাণ সাধন করতে সক্ষম।
22 তোমরা বাণীর সাধক হও, নিজেদের প্রবঞ্চনা করে শ্রোতামাত্র হয়ো না।
23 কেননা যে কেউ বাণীর শ্রোতামাত্র, ও তার সাধক নয়, সে এমন একজনের মত, যে আয়নায় নিজের মুখ লক্ষ করে :
24 নিজেকে লক্ষ করামাত্র সে চলে যায় আর সে কীরূপ লোক, তা তখনই ভুলে যায়।
25 কিন্তু যে কেউ মুক্তির সেই সিদ্ধ বিধানের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে সেইখানে অবিচল থাকে—ভুলে যাওয়ার শ্রোতা না হয়ে বরং তার সাধক হয়ে, সে যা কিছু করে তাতে সুখী হবে।
26 কেউ যদি নিজেকে ধার্মিক বলে মনে করে, অথচ নিজের জিহ্বা লাগাম দিয়ে সামলাতে না পারে, তাহলে সে নিজের হৃদয়কে ভোলায়, তার ধর্মাচরণ অসার।
27 আমাদের পিতা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে শুদ্ধ ও নিষ্কলঙ্ক ধর্মাচরণ এ: এতিম ও বিধবাদের দুঃখকষ্টের দিনে তাদের সহায়তা করা এবং সংসারের কলুষ থেকে নিজেকে অকলুষিত রক্ষা করা।