1 অতএব, প্রভুতে সেই বন্দি এই আমি তোমাদের আবেদন জানাচ্ছি, তোমরা যে আহ্বানে আহূত হয়েছ, তারই যোগ্য ভাবে চল
2 সম্পূর্ণ বিনম্রতা ও কোমলতার সঙ্গে, এবং সহিষ্ণুতার সঙ্গে চল, ভালবাসায় পরস্পরের প্রতি ধৈর্যশীল হও,
3 শান্তির বন্ধনেই আত্মার ঐক্য রক্ষা করতে যত্নবান হও।
4 দেহ এক, এবং আত্মা এক, যেমন তোমাদের আহ্বানের সেই প্রত্যাশাও এক, যে প্রত্যাশায় তোমরা আহূত হয়েছ।
5 প্রভু এক, বিশ্বাস এক, বাপ্তিস্ম এক;
6 সকলের পিতা সেই ঈশ্বর এক, যিনি সকলের ঊর্ধ্বে, সকলের দ্বারা [সক্রিয়], ও সকলের অন্তরে [বিদ্যমান]।
7 তথাপি খ্রিষ্টের দানের মাত্রা অনুসারে আমাদের প্রত্যেকজনকে অনুগ্রহ দেওয়া হয়েছে।
8 এজন্য লেখা আছে :
তিনি ঊর্ধ্বে আরোহণ করলেন, বন্দিদের সঙ্গে নিয়ে গেলেন,
মানুষের হাতে দিলেন যত দান।
9 কিন্তু, তিনি 'আরোহণ করলেন', এর অর্থ কি এই নয় যে, তিনি আগে পৃথিবীতে, এই নিম্নলোকেই অবরোহণ করেছিলেন?
10 যিনি অবরোহণ করেছিলেন, তিনিই আবার নিখিল স্বর্গলোকের ঊর্ধ্বে আরোহণ করলেন, যেন সমস্ত কিছুই নিজেতে পূর্ণ করতে পারেন।
11 আর সেই 'দেওয়াটা' অনুসারে তিনি নিজেই কাউকে প্রেরিতদূত, কাউকে নবী, কাউকে সুসমাচার প্রচারক, কাউকে পালক ও শিক্ষাগুরু নিযুক্ত করলেন,
12 যেন খ্রিস্টের দেহ গেঁথে তোলার লক্ষ্যে তিনি সেবাকর্মের জন্য পবিত্রজনদের যথার্থই উপযুক্ত করে তুলতে পারেন—
13 যতক্ষণ না আমরা সবাই ঈশ্বরপুত্র-সম্পর্কিত বিশ্বাস ও জ্ঞানের ঐক্যে পৌঁছে খ্রিষ্টের পরিপূর্ণতার পূর্ণমাত্রা অনুযায়ী সিদ্ধপুরুষ হয়ে উঠি,
14 যেন আমরা আর শিশু না থাকি, এবং মানুষের চতুরতা এবং কুটিল ও ভ্রান্তিজনক ছলনার হাতে পড়ে আমরা যেন তরঙ্গমালার আঘাতে আলোড়িত না হই ও যে কোন মতবাদের বায়ুতে এদিক ওদিক চালিত না হই ;
15 বরং ভালবাসায় সত্যনিষ্ঠ হয়ে আমরা যেন সব দিক দিয়ে তাঁরই উদ্দেশে বৃদ্ধি পাই, যিনি মাথা, সেই খ্রিস্ট,
16 যাঁর প্রভাবে গোটা দেহটা সুসংবদ্ধ ও সুসংহত হয়ে যত গ্রন্থির সহযোগিতায় ও প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সক্রিয় কর্মক্ষমতা অনুসারে এমনভাবে গড়ে উঠছে যেন ভালবাসায় নিজেকে গেঁথে তুলতে পারে।
17 সুতরাং আমি বলছি, প্রভুতেই জোর দিয়ে বলছি: তোমরা বিধর্মীদের মত আর চলো না : তারা তো শুধু নিজ নিজ অসার ধ্যানধারণায় চালিত,
18 তাদের মন অন্ধকারে আচ্ছন্ন, তাদের অন্তরের অজ্ঞতার দরুন ও তাদের হৃদয়ের কঠিনতার দরুন তারা ঈশ্বরের জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
19 বিচারবুদ্ধি হারিয়ে ফেলে তারা নিতান্ত লোলুপতার সঙ্গে সব ধরনের অশুচি কাজ করার জন্য অতৃপ্তিকর লোভের হাতে নিজেদের ছেড়ে দিয়েছে।
20 কিন্তু তোমরা খ্রিষ্টের বিষয়ে তেমন শিক্ষা পাওনি—
21 অবশ্য যদি তাঁর কথা সত্যি শুনে থাক, ও তাঁর মধ্যে দীক্ষিত হয়ে থাক সেই সত্য অনুসারে যা যিশুতে নিহিত।
22 সেই শিক্ষা অনুসারে, আগেকার জীবনধারণ ছেড়ে তোমাদের সেই পুরাতন মানুষকে ত্যাগ করতে হবে, যে মানুষ প্রতারণাময় কামনা-বাসনায় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পড়ছে ;
23 মনের নবপ্রেরণায় নিজেদের নবীকৃত করতে হবে,
24 এবং সেই নতুন মানুষকে পরিধান করতে হবে, যে মানুষ ধর্মময়তা ও সত্যজনিত পুণ্যতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট।
25 এজন্য, যা মিথ্যা, তা ত্যাগ ক'রে তোমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ প্রতিবেশীর সঙ্গে সত্যকথা বল, কারণ আমরা পরস্পর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।
26 ক্রুদ্ধ হয়েও পাপ করো না; তোমরা ক্রুদ্ধ থাকতে যেন সূর্যাস্ত না হয় ;
27 দিয়াবলকেও সুযোগ দিয়ো না ;
28 চুরি করা যার অভ্যাস, সে আর চুরি না করুক, বরং নিজের দু'হাত দিয়ে ভাল একটা কিছু করুক, যেন অভাবীদের সঙ্গে সহভাগিতা করার মত তার কিছু থাকে ;
29 তোমাদের মুখ থেকে যেন কোন খারাপ কথা না বের হয়, বরং প্রয়োজনমত যা কিছু গঠনমূলক হতে পারে, তোমরা তেমন কথাই বল, যারা শোনে তাদের যেন উপকার হয়।
30 আর যাঁর দ্বারা তোমরা মুক্তিলাভের দিনের উদ্দেশ্যে ঐশ মুদ্রাঙ্কনে চিহ্নিত হয়েছ, ঈশ্বরের সেই পবিত্র আত্মাকে তোমরা দুঃখ দিয়ো না।
31 যত অনিষ্টের সঙ্গে যত তিক্ততা, রোষ, ক্রোধ, কোলাহল ও নিন্দাও তোমাদের মধ্য থেকে দূর করা হোক।
32 পরস্পরের প্রতি উদারমনা ও সহৃদয় হও, পরস্পরকে ক্ষমা কর, যেমন ঈশ্বরও খ্রিষ্টে তোমাদের ক্ষমা করেছেন।